সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপদের সময় ‘বন্ধু’ আফগানিস্তানের হাত ছাড়ল আমেরিকা! এমন জল্পনাই ছড়িয়েছে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবির এক বিতর্কিত মন্তব্যে। দেশটিতে তালিবানের বিরুদ্ধে মার্কিন বায়ুসেনার অভিযানের প্রসঙ্গে কিরবি অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘এটা ওদের লড়াই’।
[আরও পড়ুন: Afghanistan-এ তিনদিনে খুন ২৭ শিশু, তালিবানি বর্বরতায় স্তম্ভিত বিশ্ব]
মার্কিন ফৌজ সরতেই বিগত কয়েকদিনে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আফগানিস্তানের ছয়টি প্রদেশ দখল করেছে তালিবান। তবে এখনও পর্যন্ত লড়াইয়ে বেকায়দায় পড়া আফগান সেনাকে মদত জুগিয়ে এসেছে মার্কিন বিমানবাহিনী। জঙ্গিঘাঁটিগুলির উপর বোমাবর্ষণ করছে আমেরিকার যুদ্ধবিমানগুলি। তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশ মতো আগস্টের ৩১ তারিখের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণভাবে পাততাড়ি গুটিয়ে ফিরে আসবে মার্কিন ফৌজ। গত মাসেই এক সভায় বাইডেন বলেছিলেন, “প্রায় ২০ বছরের অভিজ্ঞতা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে যে আফগানিস্তানে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান নয়। আরও একটা বছর, আরও একটা বছর– যুক্তি দেখিয়ে লড়াই চালিয়ে গেলে সেখানে আমাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকতে হবে।” ফলে সে দেশে অবস্থা জটিল হলেও আমেরিকার ‘দীর্ঘতম লড়াই’ শেষ করার সংকল্প থেকে যে পিছু হঠবেন না বাইডেন তা স্পষ্ট। তাই ভবিষ্যতে মার্কিন বায়ুসেনার মদতও পাবে না আফগান ফৌজ বলেই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে সোমবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, “সে দেশ রক্ষার দায়িত্ব তাদের। এটা ওদের লড়াই। পরিস্থিতি সঠিক দিকে এগোচ্ছে না।”
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে সন্ত্রাস বিরোধী লড়াইয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছে আমেরিকা। আর তারই প্রভাব পড়েছে মার্কিন অর্থনীতিতে। পরিস্থিতি আরও জটিল করে হানা দিয়েছে করোনা মহামারী। ফলে এই মুহূর্তে দ্রুত আফগানিস্তান থেকে প্রস্থান করাই ওয়াশিংটনের লক্ষ্য। তাছাড়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আল-কায়দার কোমর ভেঙে দিতেও সক্ষম হয়েছে আমেরিকা। ফলে এখনই সে দেশ থেকে সরে যাওয়ার সঠিক সময় বলে মনে করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু এই পদক্ষেপের ফলে আফগানিস্তানের যে গণতন্ত্রে বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল তা শেষ হয়ে যাবে। তালিবানের আমলে ফের অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে দেশটি।