স্টাফ রিপোর্টার: জয় শ্রীরাম! বঙ্গ রাজনীতি এখন মুখরিত এই স্লোগানে। এই স্লোগানকে হাতিয়ার করেই বাংলা দখলের স্বপ্নে বুঁদ গেরুয়া শিবির। আবার ভোটের ময়দানে ‘ধর্মীয়’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে পালটা গেরুয়া শিবিরকে বিঁধছে তৃণমূল। তাঁদের সাফ কথা, ধর্মের নামে রাজনীতি করছে বিজেপি (BJP)। সম্প্রতি একাধিক ক্ষেত্রে এই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনে মেজাজ হারাতেও দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) এবার দাবি করলেন, এরাজ্যে ‘জয় শ্রীরাম’ কোনও ধর্মীয় স্লোগানই নয়।
শুক্রবার শহরে একটি সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, ‘‘জয় শ্রীরাম স্লোগান বাংলায় কোনও ধর্মীয় স্লোগান নয়। এটা বাংলায় তোষণের বিরুদ্ধে মানুষের আক্রোশের প্রকাশ। এটা এখন বাঙালি জনতার স্লোগান। মুখ্যমন্ত্রী যেখানেই যাবেন তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনতে হবে। এতে ওঁর খারাপ লাগা উচিত নয়।’’ এদিন দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের আলোচনাচক্রে যোগ দেন শাহ। সেখানে বাম-কংগ্রেস-আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddique) জোটের প্রসঙ্গ তুলে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় আসন্ন বিধানসভা ভোটে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা নিয়ে। জবাবে শাহ বলেন, “ভোটভাগের রাজনীতি একসময় হত হয়তো। আমি শুধু বলব, আমাদের ভোট অক্ষুণ্ণ থাকবে। যদি ভোট ভাগ হয়, তবে তা হবে বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ।” এ সময় দেশে বাম ভোট প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, “আমি মনে করি, ভারতে বামপন্থী আন্দোলনের দিন সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: অভিষেককে নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য, অমিত শাহকে হাজিরার নির্দেশ দিল আদালত]
বস্তুত, ভোটমুখী বঙ্গে বিজেপির প্রচারের মূল হাতিয়ারই হয়ে উঠেছে এই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। দলের রাজ্য নেতারা তো বটেই, কেন্দ্রীয় নেতারাও সভা-সমিতি থেকে বারবার এই স্লোগান দিয়েছেন। আসলে, বাংলা দখলে গেরুয়া শিবিরর প্রচারের লাইন মূলত তৃণমূলের তোষণের বিরুদ্ধে সরব হওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সভা-সমাবেশগুলি থেকে রামের নামে স্লোগান দিয়ে আসলে পালটা সংখ্যাগুরু হিন্দুদের একজোট করার চেষ্টা করছে বিজেপি। আবার প্রকাশ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা চেষ্টা করছেন, দলের গায়ে যাতে সাম্প্রদায়িক তকমা না সেঁটে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে। সম্ভবত সেকারণেই এই স্লোগানকে ধর্মীয় স্লোগান বলতে রাজি নন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাছাড়া, রাজনৈতিক মঞ্চে ইদানিং যেভাবে এর ব্যবহার বেড়েছে, তাতে সত্যিই এই স্লোগান ‘রাজনৈতিক’ হয়ে উঠেছে।