সংবাদ প্রাতিদদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পূর্ব লাদাখে লালফৌজের থাবায় পরিস্থিতি বারুদ ঠাসা। কুখ্যাত জেহাদির আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় অন্তর্ভুক্তির চেষ্টায় বাগড়া দেওয়া। চিনের একের পর এক উসকানিতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ভারত। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সদ্য সমাপ্ত এসসিও সামিটে। মঞ্চ ভাগ করলেও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি সৌজন্যটুকুও দেখাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এহেন পরিস্থিতিতে ব্রিকস গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে মঞ্চে ভাগ করতে দেখা যায় ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে বৈঠকে বসেন ব্রিকস গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীরা। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশনের পাশাপাশি ওই বৈঠকে ওয়াং ই-র সঙ্গে মঞ্চে ভাগ করতে দেখা যায় জয়শংকরকে (Jaishankar)। উপস্থিত ছিলেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভও। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করেন সদস্য দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা। এছাড়া, রাজনীতি, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা-সহ একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয় সেখানে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ব্রিকস বৈঠকে সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, “সদস্য দেশের বিদেশমন্ত্রীরা সমস্ত রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বকে সম্মান করার প্রশ্নে জোর দিয়েছেন। মতবিরোধ ও সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে আলোচনার কথা বলেছেন।” উল্লেখ্য, ব্রাজিল, রাশিয়া, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস গোষ্ঠী।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘে কাশ্মীর খোঁচা পাকিস্তানের, ‘জঙ্গিদের মদতদাতা’, পালটা দিল ভারত]
এদিকে, ব্রিকস (BRICS) বৈঠকের আগে এদিনই রাষ্ট্রসংঘে সন্ত্রাসবাদীদের আড়াল করার জন্য চিনকে একহাত নেন জয়শংকর। তিনি বলেন, “ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদীদের আড়াল করছে কয়েকটি দেশ।” এদিন নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন ইস্যুতে ‘দোষীদের শাস্তি এড়িয়ে যাওয়া’র প্রসঙ্গে জয়শংকর বলেন, “বিশ্বের ভয়ানক জঙ্গিদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষেত্রে এই কক্ষেই আমরা দেখেছি কীভাবে দোষীরা শাস্তি এড়িয়ে গিয়েছে।” মুম্বই হামলার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “প্রকাশ্যে দিবালোকে সংঘঠিত ঘৃণ্য হামলার ক্ষেত্রে যদি দোষীদের সাজা দেওয়া না হয়, তাহলে এই পরিষদ ভেবে দেখুক আমরা কী বার্তা দিচ্ছি। বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে আমাদের কাজে ও কথায় সঙ্গতি থাকা দরকার।”
উল্লেখ্য, জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই আবদুল রউফ মক্কির আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় অন্তর্ভুক্তি আটকে দিয়েছে চিন। শুধু তাই নয়, মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী পাক জঙ্গি সাজ্জাদ মিরকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করার ভারতের প্রস্তাবও আটকে গিয়েছে চিনের অপত্তিতে। কুখ্যাত এই জঙ্গি রয়েছে মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ানন্টেড তালিকায়। তাকে বাগে পেতে বারবার পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে আমেরিকা ও ভারত। কিন্তু তাতে বিশেষ ফল হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, যেহেতু ওয়াং ই এবং জয়শংকরের মধযেয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই আপাতত সম্পর্কের বরফ গলার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।