সৌরভ মাজি, বর্ধমান: স্ত্রীকে ডাক্তার দেখিয়ে ভাড়াবাড়িতে ফিরছিলেন। দেখতে পান জলে ভেজা পথে লাফাচ্ছে কই মাছ। তা দেখে আর লোভ সামলাতে পারেনি। বৃষ্টিভেজা রাস্তা থেকে দুটি কই মাছ কুড়িয়ে নেন। এর পর নজরে আসে তৃতীয় কই মাছ। সেটিকেও ধরতে যান। কিন্তু হাত যে ফাঁকা নেই! হাত খালি করতে দাঁতে চেপে ধরেন একটি কই। আচমকা মুখের মাছ ঝটকা দিয়ে গলায় চলে যায়। তাতেই শ্বাসরোধ হয়ে প্রাণ হারান যুবক। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের তেলেগ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর চোখের সামনে ছটফট করে প্রাণ হারান।
মৃতের নাম সাগর রায়। তিনি হুগলির পাণ্ডুয়ার রামবোয়া গ্রামের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে জামালপুরের তেলেগ্রামে থাকেন। সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ট্রেন ধরে তেলেগ্রামে ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত ৮টা বেজে যায়। স্টেশন থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় রাস্তায় জ্যান্ত কই দেখতে পান। ওই জ্যান্ত কই ধরতে গিয়েই অঘটন।
[আরও পড়ুন: জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর]
গলায় জ্যান্ত কই আটকে যাওয়ার পর সাগরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন। জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। প্রাণে বাঁচানো যায়নি সাগরকে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে সাগরের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃতের এক আত্মীয় বলেন, "বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় কই মাছ উঠে এসেছিল। সাগর প্রথমে ২ হাতে দুটি কই মাছ ধরেছিল। পরে রাস্তায় আর একটি কই দেখতে পেলে হাতে থাকা একটি মাছকে মুখে রেখে রাস্তা থেকে ওই মাছটি ধরতে যায়। অসাবধানতাবশত মুখে থাকা মাছটি গলায় চলে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।" সাগরের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছেন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। চোখের জল যেন বাঁধ মানছে না তাঁর।