দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: তিনদিন ধরে লাগাতার তল্লাশি। এলাকার বাইরে গা ঢাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল সোনারপুরের 'ত্রাস' জামালউদ্দিন। শুক্রবার রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা ও সোনারপুর (Sonarpur) এলাকার মাঝের একটি ডেরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আপাতত নরেন্দ্রপুর থানায় নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে জামালকে। শনিবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
গত ৭ জুলাই জামালের বিরুদ্ধে সালিশি সভার নামে এক মহিলার পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করার অভিযোগ দায়ের হয়। তার তদন্তে নেমে জামালের দুই সঙ্গীকে গ্রেপ্তার (Arrest) করেছিল সোনারপুরের থানার পুলিশ। কিন্তু সঙ্গীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আর জামালের খোঁজ মিলছিল না। সে গা ঢাকা দিয়েছিল। এদিকে, জামালের বিরুদ্ধে সালিশি সভা বসিয়ে হেনস্তা, তোলাবাজির একাধিক অভিযোগ জানাচ্ছিলেন গ্রামবাসীরা। তাতে তদন্ত আরও গুরুত্ব সহকারে শুরু করে পুলিশ। যার জেরে তিনদিনের মধ্যেই জালে এল জামাল।
[আরও পড়ুন: একুশের সমাবেশে বিঘ্ন ঘটাতে লোকাল বাতিল! কুণালের পোস্টের পরই সিদ্ধান্ত বদল রেলের]
পেল্লায় প্রাসাদের মতো বাড়ি, গণ্ডাখানেক পরিচারক-পরিচারিকা, ভিতরে সুইমিং পুল, ঘোড়ার আস্তাবল। সোনারপুরের প্রতাপনগর এলাকায় জামাল সর্দারের এহেন বিশাল বাংলো-গোত্রের বাড়িটির কোনও সরকারি অনুমতিই ছিল না। পঞ্চায়েত থেকে কোনও অনুমতি না নিয়েই বাড়িটি তৈরি করেছিল জামাল সর্দার। তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, বাড়ির কোনও নকশাও সে পঞ্চায়েতে জমা করেনি। সরকারি অনুমতি না থাকলে কীভাবে সোনারপুরের উপকণ্ঠে এতদিন ধরে বাড়িটি তৈরি করতে পারল জামাল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সোনারপুর এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে জামালের নাম। সালিশি সভার নাম করে গ্রামবাসীদের অত্যাচার করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে তঁার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক মহিলাকে সারাদিন শিকলে বেঁধে পেটানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতেই জামালের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। দেখা যায়, জামালের বিরাট বাংলো-বাড়িতে কার্যত বিলাসের এলাহি আয়োজন। তবে, এসবের মধ্যেই আপাতত বাড়িতে তালা লাগিয়ে পলাতক জামাল ও তার পরিবার। পরপর তিনদিন তার বাড়িতে বনদপ্তর উপস্থিত হয়েও উদ্ধার করতে পারেনি কচ্ছপগুলিকে। ইতিমধ্যে সোনারপুর থানায় কচ্ছপ রাখার অভিযোগে জামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে বনদপ্তরের তরফ থেকে।