shono
Advertisement

ছোবল মেরে পায়েই আটকে ছিল কেউটে, শিশুকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিল জঙ্গিপুর হাসপাতাল

বিষক্রিয়ার ফলে কার্যত কোমায় চলে গিয়েছিল ৬ বছরের বালিকা।
Posted: 07:52 PM Jun 18, 2022Updated: 09:40 PM Jun 18, 2022

গৌতম ব্রহ্ম: ৩১ বছরের গৃহবধূর পর ৬ বছরের নাবালিকা। এবার ত্রাতা সেই আম্বু ব্যাগ আর একদল নাছোড়বান্দা ডাক্তার নার্সের অদম্য জেদ। কয়েকঘন্টা অক্লান্ত লড়াইয়ের পর মাম্পি সরকার নামের শিশু এখন বিপন্মুক্ত। রাজ্য তো বটেই গোটা দেশ এই ছোট মহকুমা হাসপাতালের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

Advertisement

কাজটা অত্যন্ত কঠিন ছিল জঙ্গিপুর মহকুমার হাসপাতালের কর্মীদের কাছে। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা সঞ্জয় সরকার মেয়ে মাম্পিকে ভয়ংকরভাবে ছোবল দিয়েছিল কেউটে। দংশনের পর পায়েই আটকে ছিল সেই ঘাতক বিষধর। বাড়ির লোক চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখেন সেই ভয়ংকর দৃশ্য। তারা টেনে সাপটিকে বের করে। ততক্ষণে অবশ্য সবটুকু বিষ মাম্পির শরীরে ঢেলে দিয়েছে কেউটে সাপটি। দ্রুত হাসপাতালে আনা হলেও কার্যত বিষক্রিয়ায় কোমায় চলে যায় মাম্পি। তার ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের পেশি অকেজো হয়ে পড়ে। স্তব্ধ হয়ে যায় পিউপিলারি রিফ্লেক্স।

[আরও পড়ুন: ‘পাত্তা পাননি প্রধানমন্ত্রীও’, ডায়মন্ড হারবার লোকসভার রিপোর্ট কার্ড পেশ করে তোপ অভিষেকের]

জঙ্গিপুর মহকুমার হাসপাতালের সুপার ডা. অবিনাশ কুমার বলেন, “আধুনিকীকরণের জন্যে আমাদের সিসিইউ এখন বন্ধ। কিন্তু মেয়েটির ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দরকার ছিল। অন্যত্র রেফার করলে রাস্তাতেই প্রাণ হারাত শিশুটি। তাই একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই যুদ্ধ শুরু করেন আমাদের ডাক্তারবাবু ও নার্সদিদিরা।”

অনডিউটি মেডিক্যাল অফিসার দিব্যেন্দু মণ্ডল দেখেন শিশুটি অতি সংকটজনক। তাঁর ফুসফুস কাজ করছে না। দিব্যেন্দুবাবু সঙ্গে সঙ্গে সিপিআর দিয়ে মাম্পির ফুসফুসকে প্রাথমিকভাবে চালু করেন। তারপর দ্রুত ইনকিউবেট করে আম্বু ব্যাগের সাহায্যে হাত দিয়ে পাম্প করেই অস্থায়ী ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় অ্যান্টি স্নেক ভেনম। ব্যবহার করা হয় মক্স রেগুলেটর। অবিনাশবাবু জানান, কামড় দিয়ে সাপ শরীরে সাপ আটকে ছিল। এত ভয়ংকর ছোবল সাধারণ দেখা যায় না।

উল্লেখ্য, এর আগে নন্দিতা দাস নামের এক গৃহবধূকে এভাবেই হাতে পাম্প করে ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে বাঁচানো হয়েছিল। সেই ঘটনার ৭২ ঘণ্টা কাটেনি। তার মধ্যেই মাম্পিকে বাঁচিয়ে নজির গড়ল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল। সাপে কাটা রোগের বিশেষজ্ঞ ডা. দয়ালবন্ধু মজুমদার বলেন, “যেভাবে জেলার হাসপাতালগুলো সংকটজনক সর্পদ্রষ্ট রোগীকে বাঁচাচ্ছে তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। আর পরপর দু’টি রোগীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে কার্যত নজির গড়েছে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল।” শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জঙ্গিপুর হাসপাতালের HDU-তে চিকিৎসাধীন ৬ বছরের কন্যা।

[আরও পড়ুন: তৃণমূলে আসার জন্য লাইনে বিজেপি নেতারা, দরজা খুললেই উড়ে যাবে বিজেপি: অভিষেক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার