সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমলিঙ্গের বিয়েতে (Same-sex marriage) সম্মতি না দেওয়া ‘অসাংবিধানিক’। বুধবার এমনই যুগান্তকারী রায় দিল জাপানের (Japan) এক আদালত। বিশ্বের বহু দেশই সমলিঙ্গের বিয়েতে সিলমোহর দিলেও জাপানে এতদিন স্বীকৃতি পায়নি এই ধরনের সম্পর্ক। অবশেষে জাপানের জেলা আদালত জানিয়ে দিল, সমলিঙ্গের বিয়ে কোনও ভাবেই ‘অসাংবিধানিক’ নয়।
জাপানে এখনও পর্যন্ত সমকামীদের বিয়ে সংক্রান্ত কোনও আইন নেই। কিন্তু সেদেশের সমকামী আন্দোলনকারীদের মতে, এই রায়ের পরে পরিস্থিতি বদলাবে। আগামী দিনে সমলিঙ্গের বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পাবে। তাই সব দিক দিয়েই এই নজিরবিহীন রায়কে ঐতিহাসিক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। অনেকেই উচ্ছ্বসিত এই রায়ে। ‘ম্যারেজ ফর অল জাপান’ নামে সমকামীদের বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত এক সংগঠনের প্রধান গন মাতসুনাকা এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “রায়দানের আগে পর্যন্ত আমরা জানতাম না কী হতে চলেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই রায়ের মূল্য মাপা যাবে না।”
[আরও পড়ুন: মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত শ্রীলঙ্কা, রাষ্ট্রসংঘে ভোটাভুটির আগে ভারতের ‘সাহায্যপ্রার্থী’ কলম্বো]
এমনিতে এশিয়ার বহু দেশের তুলনায় জাপান অপেক্ষাকৃত উদারপন্থী। তবুও সামাজিক ভাবে সেদেশে সমলিঙ্গের প্রেম বা বিয়ে স্বীকৃত নয়। তাই বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে সমলিঙ্গ সম্প্রদায় আড়ালেই থাকে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে তাইওয়ানে সমলিঙ্গের বিয়েতে সিলমোহর দেওয়া হয়। এশিয়ায় প্রথম এই দেশেই সমলিঙ্গের বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান আইন অনুযায়ী জাপানে এখনও স্বীকৃত নয় এই ধরনের সম্পর্ক। এমনকী, সমকামী দম্পতিদের বাড়ি ভাড়া নেওয়া কিংবা কোনও সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করারও আইন নেই। তবে বিভিন্ন পুরসভা থেকে পার্টনারশিপ সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তাঁরা বাড়ি ভাড়া করতে পারেন।
২ পুরুষ সমকামী দম্পতি ও এক মহিলা সমকামী দম্পতি জাপানের স্যাপোরো জেলা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরস্পরকে ভালবাসা সত্ত্বেও বিয়ে করতে না পারার কারণে যে যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে তাঁদের যেতে হচ্ছে, সেই কারণে জাপান সরকারের কাছে ১ মিলিয়ন ইয়েন ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তাঁরা। তাঁদের আইনজীবীর মতে, এই মামলায় আদালতের রায় ‘বৈপ্লবিক’। তিনি সংসদের কাছে আরজি জানান, সমলিঙ্গের বিয়েকে স্বীকৃতি দিতে শিগগিরি যেন একটি আইন তৈরি করা হয়।