টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: দেশরক্ষার মতো গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। পরিবার-পরিজন, ভিটেমাটি ছেড়ে কোথায় কোথায় না গিয়েছেন? দুর্গম পার্বত্য এলাকায় যেতেও বুক কাঁপেনি এতটুকু। আর সেই সাহসিকতা, কর্তব্যপরায়ণতার মাশুল দিতে হল প্রাণ দিয়ে। শুক্রবার গাড়িতে চড়ে যাওয়ার সময় পাহাড়ি পথের বাঁকে সেনাবাহিনীর(Army) গাড়ি উলটে মৃত্যু হয় ১৬ জওয়ানের। তাঁদেরই একজন বাঁকুড়ার (Bankura) গোপীনাথ মাকুড়। হাবিলদার পদে কর্মরত গোপীনাথ এবার ফিরবেন নিজের ঘরে, কিন্তু কফিনবন্দি হয়ে। বীর সন্তানের সেই নিথর দেহ শেষবারের মতো স্পর্শ করার অপেক্ষায় মা, বাবা, স্ত্রী, পুত্ররা।
শুক্রবার উত্তর সিকিমের (North Sikkim) জেমা এলাকায় খাদে গাড়ি উলটে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তিনজন জুনিয়র কমিশন অফিসার-সহ ১৬ জন ভারতীয় জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ২০ জন সেনা জওয়ানকে নিয়ে তিনটি ট্রাকের একটি আর্মি কনভয় (Army Convoy) উত্তর সিকিমের চাটেন থেকে থাংগু যাচ্ছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেনার ট্রাক রাস্তায় বাঁক নেওয়ার সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাড়া ঢালে ধাক্কা খেয়ে সোজা খাদে ছিটকে পড়ে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত আর্মি ট্রাকে থাকা ১৬ জন সেনা জওয়ানের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আরও চারজন গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এঁদের মধ্যে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর (Bishnupur) থানার বাঁকাদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভালুকা গ্রামের গোপীনাথ মাকুড় নামে ওই সেনাকর্মী রয়েছেন। ভালুকা গ্রামের বাড়িতে এই দুঃসংবাদ আসার পর থেকেই শোকস্তব্ধ পুরো এলাকা।
[আরও পডুন: হিন্দুপক্ষের আবেদনে সায়! মথুরার শাহি ঈদগাহ মসজিদে সার্ভের নির্দেশ আদালতের]
মৃত সেনাকর্মীর পরিবার সূত্রে খবর, ২০০১ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন গোপীনাথ। বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী, ১১ বছরের একমাত্র ছেলে, ভাই ও ভ্রাতৃবধূ রয়েছেন। গত আগস্টে শেষবারের মতো বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরে যান গোপীনাথ। আগামী মার্চে বাড়ি ফিরে বাঁকুড়া শহরের জুনবেদিয়ায় নির্মীয়মান বাড়িতে গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল৷ তার আগেই সব শেষ! শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে সড়কপথে সেনা জওয়ান গোপীনাথ মাকুড়ের দেহ ভালুকায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসবে।