সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গোষ্ঠীকলহ বা রাজনৈতিক কাজিয়া শুধু নয়। রীতিমতো অতীতের ‘ট্র্যাডিশন’ বজায় রেখে পুরবোর্ড গঠনের ৬ মাস পার হতেই তৃণমূল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জমা পড়ল পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় (Jhalda Municipality)। বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ওই পুরসভার পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি জমা পড়েছে।
পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের পাশাপাশি সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়ার জেলাশাসক, ঝালদা পুরসভার নির্বাহি আধিকারিক, ঝালদার মহকুমাশাসক ও পূর্ত ভবনের ডিরেক্টর অফ লোক্যাল বডিসের কাছে। ৬জন কাউন্সিলরের আনা অনাস্থায় কংগ্রেসের পাঁচ ও একজন নির্দল কাউন্সিলর রয়েছেন। নির্দল কাউন্সিলর সোমনাথ কর্মকার (রঞ্জন) আগে তৃণমূলে ছিলেন। পুরভোটে দলের তরফে টিকিট না পাওয়ায় নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাই দল তাঁকে সাসপেন্ড করে। তবে গত এপ্রিলে বোর্ড গঠনের দিন শাসক দলকে সমর্থন করেছিলেন। অনাস্থা আনার পর ঝালদার তৃণমূল পুরপ্রধান বলেন, “রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। পুরবিধি মেনে কাজ হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘ছেলের নাম শুভেন্দু রাখবেন না’, মীরজাফর-শুভেন্দুকে একাসনে বসিয়ে খোঁচা সায়ন্তিকার]
অনাস্থায় যে পাঁচ কংগ্রেস কাউন্সিলর সই করেছিলেন তাঁরা হলেন বিপ্লব কয়াল, পিন্টু চন্দ্র, মিঠুন কান্দু, পূর্ণিমা কান্দু, বিজয়কান্ত কান্দু। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “অনাস্থা আনতে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য থাকা দরকার। আগে নিয়ে আসুক তারপর অন্য কথা।” এই পুরসভায় ১২টি ওয়ার্ড। সেক্ষেত্রে সাতজন কাউন্সিলর প্রয়োজন। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, “ভোটের দিন চমক থাকবে। এবার ঝালদায় মানুষের পুরবোর্ড গঠন হতে চলেছে।” পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস জানিয়েছে, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারী মনোভাব ও একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধেই অনাস্থা আনা হয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই পুরসভার নির্বাচনী ফলাফলে তৃণমূল ও কংগ্রেস পাঁচটি করে আসন পায়। দু’টি আসনে জয়ী হন দুই নির্দল প্রার্থী। ফলাফলের দিনই জয়ী নির্দল প্রার্থী শীলা চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দেন। বোর্ড গঠনের আগেই কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
উপনির্বাচনে ওই দু’নম্বর ওয়ার্ডে তার ভাইপো তথা কংগ্রেস প্রার্থী মিঠুন কান্দু জয়লাভ করেন। গত পুরবোর্ডেও দু’বার অনাস্থা আসায় তিনবার নতুন পুরপ্রধান কুরসিতে বসেন। এদিন অনাস্থার খবর চাউর হতেই ঝালদা এলাকার মানুষজন বলেন, “এখানকার পুর প্রতিনিধিরা উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন না। ক্ষমতা দখলই লক্ষ্য।”