সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়াবহ ঘটনা ঝাড়খণ্ডে (Jharkhand)। ঋণ করে ট্রাক্টর কিনেছিলেন এক কৃষক। সেই ঋণ সময় মতো শোধ না করায় মরতে হল কৃষকের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে। তরুণীর উপর দিয়ে ট্রাক্টর চালিয়ে দিলেন ঋণ আদায়কর্মী। এমন ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। অভিযুক্ত ঋণ আদায়কর্মী-সহ ঋণ প্রদানকারী সংস্থার ৪ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ঠিক কী ঘটেছিল?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবারের। হাজারিবাগ (Hajaraibag) জেলায় বাসিন্দা কৃষক মিথিলেশ মেহতা। তিনি বিশেষভাবে সক্ষম। সম্প্রতি ট্রাক্টর কেনার জন্য মাহিন্দ্রা ফিনান্স কোম্পানি (Mahindra Finance Company) থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই মতো ট্রাক্টর কেনেনও। যদিও সময় মতো কিস্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না তাঁর পক্ষে। মিথিলেশ জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর মোবাইল ফোনে ফিনান্স কোম্পানি একটি মেসেজ পাঠায়। সেখানে লেখা হয়, ঋণের কিস্তি না দেওয়ায় তাঁর ট্রাক্টরটি নিয়ে নেবে সংস্থা।
[আরও পড়ুন: জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই ‘নো এন্ট্রি’ দিল্লি দাঙ্গায় অভিযুক্ত সফুরা জারগারকে]
এমন মেসেজ পাওয়া মাত্র স্থানীয় পেট্রল পাম্পে ছুটে যান মিথিলেশ। জায়গার অভাবে সেখানেই রাখাছিল ট্রাক্টরটি। পাম্পে পৌঁছে দেখেন, সেখানে আগেই হাজির হয়েছে ঋণ আদায়কর্মী। সে ট্রাক্টরটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তখন। তা আটকানোর জন্য সামনে এসে দাঁড়ান মিথিলেশ। ট্রাক্টর যেন না নেওয়া হয়, অনুরোধ করেন তিনি। এরমধ্যেই ঘটনাস্থলে হাজির হন অন্তঃসত্ত্বা মিথিলেশের মেয়ে। তিনি বাবার হয়ে কাতর আবেদন করেন। যদিও কোনও কথা শুনতে চায়নি ঋণপ্রদানকারী সংস্থার কর্মী। এরপর তরুণীর উপর দিয়েই ট্রাক্টর চালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: বিজেপির দেখানো পথে তৃণমূল বিরোধিতা! পলিটব্যুরোর বৈঠকে ধমক খেলেন বঙ্গ সিপিএম নেতারা]
রক্তাক্ত হন তরুণী। দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি বছর সাতাশের তরুণীকে। পুলিশ সুপার মনোজ রতন ছোটের বক্তব্য, পুলিশকে না জানিয়ে ওই কৃষকের বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন ঋণপ্রদানকারী সংস্থার আদায়কর্মীরা। এমনকী পরিবারকেও আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত আদায়কর্মী-সহ ও সংস্থার চারজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ঋণদানকারী সংস্থা মহিন্দ্রাকে তরুণীর মৃত্যুতে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ঘটনায় বেকায়দায় পড়ে মহিন্দ্রা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনিশ শাহ জানিয়েছেন, হাজিরাবাগে যা ঘটেছে তাতে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত ও বিব্রত। খারাপ সময়ে পরিবারটির পাশে রয়েছি।