নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বীরভূমের মাটিতে ফের রাজনৈতিক উত্তাপ। বিজেপি (BJP) বনাম তৃণমূলের মধ্যে শুরু নয়া বাকযুদ্ধ। শনিবার মুরারইতে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari) চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, শতাব্দী রায়, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তৃণমূল করে চলেছেন। তাঁর আরও দাবি, শতাব্দী, আশিস যদিও তাঁর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করতে চান, তাহলে তাঁরা প্রকাশ্যে অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধিতা করুন। জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্যের পরই সাংবাদিক সম্মেলন করে শতাব্দী রায় তাঁর দাবি নস্যাৎ করেছেন। আর আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ”কেষ্টকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মত ও পথই আমাদের পথ।”
দলবদলকারী হিসেবে জিতেন্দ্র তিওয়ারির নাম যথেষ্ট পরিচিত বঙ্গের রাজনৈতিক মহলে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে গিয়েছিলেন আসানসোলের (Asansol) প্রাক্তন মেয়র। তবে ভোটে তিনি হেরে যান। তারপর আবার তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি। ফলে জিতেন্দ্র তিওয়ারি কোনও পদ ছাড়াই রয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। সক্রিয় কর্মী হিসেবেই অবশ্য কাজকর্ম করছেন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতাদের নিয়ে নতুন পথে রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূল নেতৃত্বের। তাই তিনি টার্গেট করেছেন এলাকার সাংসদ শতাব্দী রায় ও রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
[আরও পড়ুন: অনলাইন গেমে কোটি কোটি টাকা ‘প্রতারণা’, গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেপ্তার গার্ডেনরিচের আমির খান]
শনিবার মুরারইতে দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সেখানেই তিনি বলেন, ”শতাব্দী রায়, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই তাঁরা তৃণমূল করছেন। একথা যদি মিথ্যে হয়, তবে তাঁরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলুন যে অনুব্রত মণ্ডল যা করেছেন, তা তাঁরা সমর্থন করে না।”
জিতেন্দ্রর মন্তব্য নিয়ে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ”দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, কেষ্টকে নিয়ে আমাদেরও মতামত তাই। মুখ্যমন্ত্রী বীরের মর্যাদা দিতে বলেছেন অনুব্রতকে। মুখ্যমন্ত্রীর মতই আমাদের পথ।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, ”জিতেন্দ্র তিওয়ারি হয়েছেন তৃণমূলের ভাত খেয়ে। ব্রিটিশ পলিসিতে মিথ্যা রটনা করে ভাগাভাগি করতে চাইছেন।”
[আরও পড়ুন: কালিম্পং থেকে গ্রেপ্তার পাক চর! বনগাঁ সীমান্তে আন্তর্জাতিক মোবাইল পাচারচক্রের পর্দা ফাঁস]
উল্লেখ্য, শতাব্দী রায় প্রকাশ্যে খয়রাশোলের জনসভায় অনুব্রত মণ্ডলের পাশে থাকার কথা বলেছেন। দিন কয়েক আগে খয়রাশোলের জনসভায় শতাব্দী রায় বলেছিলেন, ”ভাল সময়ে যে মানুষটার কাছে আমরা সাহায্য পেয়েছি, তার অসুবিধার দিনে তার পাশে থাকব না, তাই হয়? সবাই আমরা তাঁর পাশে আছি।” শতাব্দী রায় জিতেন্দ্রের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে জানান, ”উনি কি পদে আছেন যে কথার উত্তর দিতে হবে? কেউ যা খুশি বলবে আর আমি তার উত্তর দিয়ে দেব? এটা হয় না।”