শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: চাকরি না মেলায় টাকা ফেরতের দাবিতে তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে ধরনায় বসলেন প্রতারিত প্রার্থীরা। প্রশিক্ষণ নেওয়া ও নিয়োগপত্র পাওয়ার জন্য় কাজে যোগ দিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন নিয়োগপত্র ভুয়ো। এদিকে চাকরির জন্য মাথাপিছু ১১ লক্ষ টাকা তৃণমূল নেতার হাতে তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই টাকা ফেরত চেয়ে শনিবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি (২) এর মেরুয়াল এলাকায় ধরনায় বসলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
প্রতারিত প্রার্থীদের অভিযোগ, কৃষি দপ্তরের তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরি দেওয়ার নামে দু’ বছর আগে কমলবাড়ি (২) পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি উত্তম ঘোষের বাড়িতে গিয়ে মাথা পিছু ১১ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়। টাকা দেওয়ার সময় বাড়িতে তাঁর ভাগনা মিঠুন ঘোষ ও দাদা অনিল ঘোষ (যিনি হেমতাবাদ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক) উপস্থিত ছিলেন। তারপর প্রশিক্ষণের নাম করে তাঁদের কলকাতায় কৃষি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েকদিন পর নিয়োগপত্রও হাতে আসে। পরে কৃষি দপ্তরের কাজে যোগদান করতে গিয়ে জানা যায় নিয়োগপত্র ভুয়ো। এমনকী, প্রশিক্ষণটাও ভুয়ো ছিল।
[আরও পড়ুন: নাগপুরের সেগুন থেকে মির্জাপুরের কার্পেট, নতুন সংসদ ভবনে মিলেছে দেশ, ব্রাত্য বাংলা!]
প্রতারিত প্রার্থী সুমনকুমার নাথের অভিযোগ,”উত্তম ঘোষ বলেছিলেন আমার দুই ভাগ্নাকে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দিয়েছি। এখন আর স্কুলে হবে না। কৃষি দপ্তরে সি বা ডি গ্রুপে চাকরি হয়ে যাবে। তাই ১১ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। নিয়োগপত্র ভুয়ো জানতে পেরে টাকা ফেরতের জন্য একবছর ধরে ঘুরছি। ভয় দেখাচ্ছে। আজ থেকে টাকা না পাওয়া পর্যন্ত ধরনা চলবে।” আরেক প্রতারিত প্রার্থী অনিন্দ্যকুমার দাসের অভিযোগ, “উত্তম ঘোষের হাতেই ১১ লক্ষ টাকা দিয়েছি। আমার মা শয্যাশায়ী। চাকরি আর লাগবে না, এখন মায়ের চিকিৎসার জন্য আমার টাকা দরকার। কিন্তু টাকা চাইতে বাড়িতে আগে অনেকবার এসেছি,তাড়িয়ে দিয়েছে।”
তবে টাকা নেওয়ার ঘটনা সত্য বলে দাবি করে পাশ্ববর্তী কমলাবাড়ি (১) পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের প্রশান্ত দাস বলেন,”উত্তম ঘোষের ভাগ্না মিঠুন ঘোষ টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরতের জন্য অনেকবার মিটিংও হয়েছে। কিন্তু কিছুই সমাধান হয়নি।” উত্তম ঘোষের বাড়ির এলাকায় তাঁর ভাগ্না মিঠুন ঘোষ থাকেন। তবে এদিন মিঠুনবাবুকে এলাকার ধারে কাছে দেখা যায়নি। যদিও ধরনা চলাকালীন দীর্ঘক্ষণ পর বাড়ি থেকে বের হয়ে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি উত্তম ঘোষ বলেন,”টাকা যে নিয়েছি,তা প্রমাণ করা সম্ভব নয়। মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।” তবে প্রতারিতরা টাকার দাবিতে ধরনায় অনড়।