সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবানের (Taliban) হাতে বন্দি মার্কিন নৌসেনার প্রাক্তন কর্মীকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রবিবার তিনি স্পষ্ট জানান, তালিবান যদি আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র আশাবাদী, তাহলে ওই মার্কিন নাগরিককে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ত্রাণ পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে সায় ভারতের]
দু’বছর আগে মার্কিন নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী মার্ক ফ্রেরিচসকে অপহরণ করে তালিবান। প্রায় দশ বছর ধরে আফগানিস্তানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ওয়াশিংটনের মতে, তালিবানের হাতে আমেরিকার শেষ বন্দি হচ্ছেন ফ্রেরিচস। তাঁকে মুক্ত করতে পারলে জেহাদিদের বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য পাবে বাইডেন প্রশাসন। এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, “তালিবান যদি আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র আশাবাদী, তাহলে ওই মার্কিন নাগরিককে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে। এটা নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না। কোনও মার্কিন নাগরিকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা বা নিরীহ মানুষকে হুমকি দেওয়া মেনে নেওয়া হবে না। কাউকে অপহরণ করা অত্যন্ত কাপুরুষোচিত কাজ।”
তালিবানের দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে (Afghanistan) দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে গত অক্টোবর মাসে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। আফগান জাতীয় ব্যাংকের টাকা ফ্রিজ করে রেখেছে আমেরিকা। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মঞ্চের স্বীকৃতি পেতে মরিয়া হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদার সরকার। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বন্দি মার্কিন নাগরিকের মুক্তির জন্য সচেষ্ট হয়েছেন বাইডেন।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে কাবুল দখল করে তালিবান। জেহাদিদের রাজত্বে অশিক্ষার অন্ধকার গ্রাস করছে আফগানিস্তানকে। ক্ষমতায় এসে মহিলাদের অধিকার রক্ষার কথা বলেছিল তালিবান। অনেকেই ভেবেছিলেন যে এবারে হয়তো কিছুটা বদলেছে তালিবরা। কিন্তু আশঙ্কা সত্যি করে স্বমেজাজে ফিরেছে তারা। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পর স্কুলেও মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জেহাদি সংগঠনটি। কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের উপর বাধানিষেধ জারি করেছে তালিবান। বিক্ষোভ মিছিল সংক্রান্ত খবর প্রঅকাশ করলে আক্রমণ নেমে আসছে সংবাদমাধ্যমের উপর। সবমিলিয়ে, আফগানভূমে সংবাদমাধ্যমের উপর জঙ্গিদের লাগাম ক্রমাগত চেপে বসছে।