সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবিশ্বাসের আবহে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক সারলেন আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধান জো বাইডেন। বিশ্বের দুই মহাশক্তির এই মেগা-আলোচনার দিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছিল ভারত-সহ গোটা বিশ্ব। এদিন ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে মত বিনিময় হলেও কাঁটা ফুটেছে তাইওয়ান প্রসঙ্গে বলেই খবর।
বুধবার সান ফ্রান্সিস্কোর দক্ষিণে প্রায় ৩০ মাইল দূরে ফিলোলি এস্টেটের একটি বাগানবাড়িতে বৈঠকে বসেন বাইডেন ও জিনপিং। চোখ জুড়ানো সবুজে ঘেরা ওই জায়গাটি মনে প্রশান্তি আনলেও দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর আলাপ যে মোটেও সুখকর হয়নি তা এদিন স্পষ্ট হয়ে যায়। চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকে তাইওয়ান নিয়ে বাইডেনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন শি। তিনি বলেন, “স্বাধীন তাইওয়ান নীতিকে সমর্থন না করার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন আপনারাই (আমেরিকা)। এবার তা প্রমাণ করুন।” মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধানকে ফের ‘ওয়ান চায়না’ নীতির কথা মনে করিয়ে দেন জিনপিং। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “ফের গড়ে উঠবে অখণ্ড চিন। শান্তি বজায় রাখতেই হবে। তবে সমস্যার সমাধান খোঁজা জরুরি।”
এদিকে, বৈঠক শেষে বাইডেন বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজা সংঘাত নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। মার্কিন নাগরিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থেকে শুরু করে মানবাধিকার প্রসঙ্গও তুলে ধরেছি।” বেজিংয়ের সঙ্গে যে ওয়াশিংটন ‘সাগর সংগ্রামে’র দিকে এগোচ্ছে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে বাইডেন জানান, মেগা-বৈঠকে দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের ‘গা-জোয়ারি’ নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: লালফৌজকেও চায় না মালদ্বীপ, ভারতের ‘ক্ষোভ প্রশমনে’ মন্তব্য নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের]
বলে রাখা ভালো, বিশ্বজুড়ে ক্রমাগত বেজে চলা রণদুন্দুভির মাঝেই মঙ্গলবার মার্কিন মুলুকে পা রাখেন জিনপিং। ২০১৭ সালের পর এটাই তাঁর প্রথম আমেরিকা সফর। গাজা যুদ্ধ ও ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের মুখে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে বেজিং বনাম ওয়াশিংটন দড়ি টানাটানিতে তাইওয়ান কাঁটার দিকেই নজর ছিল সবার।
বিশ্লেষকদের মতে, হামাসকে মদত জোগাচ্ছে ইরান, চিন ও রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে মধ্যপ্রাচ্যে সেকেন্ড ফ্রন্ট খুলতে হামাসকে ব্যবহার করেছে মস্কো। ইউক্রেনে কিছুটা চাপমুক্ত হওয়ার জন্যই এই ছক রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। একইসঙ্গে লেবাননে ঘুঁটি সাজাচ্ছে ইরান। তাইওয়ানের কাছে মহড়া চালিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট খোলার সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে চিন। সব মিলিয়ে, আমেরিকাকে চক্রব্যুহে বিভ্রান্ত করে কোণঠাসা করার খেলায় মেতেছে ইরান-চিন-রাশিয়া অক্ষ। এই প্রেক্ষাপটে বাইডেন-শি বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ তা সময়ই বলবে।