অভিরূপ দাস: দক্ষিণের পর এবার উত্তরেও। প্রয়াত রাজনীতিবিদের স্মরণে নতুন নামের ফলক বসছে জোড়াবাগান পার্কের মাথায়। কলকাতা পুরসভার একুশ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়াবাগান পার্কের নাম হতে চলেছে সুব্রত মুখোপাধ্যায় উদ্যান (Subrata Mukherjee Park)।
১৯৪৬ সালে বজবজে জন্ম। শিয়ালদহ বঙ্গবাসী কলেজে পড়ার সময়ে রাজনীতির শুরু। জীবনের সিংহভাগটাই কাটিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার একডালিয়া এলাকায়। একডালিয়া আর সুব্রত মুখোপাধ্যায় সমার্থক শব্দ। তাঁকে বাদ দিয়ে একডালিয়া ভাবা যায় না। ১৯৭১ সালে এসেছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে থেকেছেন সেখানেই। প্রয়াণের পর এখানেই তাঁর নামে বসেছে মূর্তি। হয়েছে উদ্যানও। শেষ বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ের ৫০তম বর্ষ ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। দশম বারের জন্য বিধানসভার সদস্যও হয়েছিলেন তিনি। কলকাতার মেয়র ছাড়াও একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব সামলেছেন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। যাঁর মৃত্যুর পর তাঁর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে টানা দু’ঘন্টা আলোচনা হয় বিধানসভায়। তার নামেই এবার জোড়াবাগান পার্ক। এর নেপথ্যেও রয়েছে সুদৃঢ় ইতিহাস। ১৯৭৭ সালের ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের সময় সুব্রতও হেরে যান। ১৯৮২ সালের বিধানসভা ভোটে আসন বদল করে চলে যান উত্তর কলকাতার জোড়াবাগানে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়াই চার বছরে কৃষকবন্ধুতে সাড়ে ১২ হাজার কোটি, নজির রাজ্য সরকারের]
জোড়াবাগান এলাকার কাউন্সিলর মীরা হাজরা জানিয়েছেন, টানা তিনবার জোড়াবাগানের বিধায়ক ছিলেন প্রয়াত রাজনীতিবিদ। এলাকা উন্নয়নের জন্য তাঁর অবদান অপরিসীম। কাউন্সিলরের কথায়, একসময় এ এলাকায় মারাত্মক জলের সমস্যা ছিল। জলের চাপ এতোই কম ছিল একতলা বাড়িতে এলেও দু’তলা তিনতলায় সরু হয়ে জল পড়ত। একটা বালতি ভরতেই এক ঘন্টা পার। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে সুব্রত মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। জলের গতি বাড়লেও দেখা যায় পাইপের সমস্যা। পুরনো কলকাতা হওয়ায় অধিকাংশ পাইপ ছিল জরাজীর্ণ। গোটা একুশ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে নতুন জলের পাইপ বসান সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
“এলাকার মানুষ আজকে দুয়ারে পানীয় জল পাচ্ছেন ওঁর জন্যেই। সেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেই জোড়াবাগান পার্কের নাম রাখা হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নামে।” জানিয়েছেন কাউন্সিলর। ইতিমধ্যেই স্থানীয় বিধায়ক শশী পাঁজাকে চিঠি দিয়েছেন কাউন্সিলর। বুধবার কলকাতা পুরসভায় মেয়র পারিষদের বৈঠক ছিল। সূত্রের খবর, সেখানে নাম বদলানোর প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর প্রয়াত হয়েছেন সুব্রত। তাঁর মৃত্যুর পর মূর্তি বসানো হয়েছে একডালিয়ায়। যদিও সে মূর্তি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দ হয়নি। ফের নতুন করে নামজাদা এক শিল্পীর কাছে মূর্তির বরাত দিয়েছে কলকাতা পুরসভা।