স্টাফ রিপোর্টার: “আপনাকে ঘিরে ‘চক্রব্যূহ’ তৈরি হচ্ছে, সতর্ক থাকুন।” ফোনে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সতর্ক থাকতে এমনই পরামর্শ দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। কী সেই ‘চক্রব্যূহ’? কারাই বা তৈরি করছে সেই ‘চক্রব্যূহ’ সে সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট কিছু করেননি নাড্ডা। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে দিলীপ (Dilip Ghosh) শিবিরে। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিকে হঠাৎ করে কেন সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিলেন দলের বর্তমান সর্বভারতীয় সভাপতি, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চাও।
বর্তমানে বঙ্গ বিজেপির (BJP) ক্ষমতাসীন শিবিরের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা প্রকাশ্যেও এসেছে। দলের একাংশের দাবি, অমিত মালব্য, সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), অমিতাভ চক্রবর্তীদের সঙ্গে দিলীপবাবুর দূরত্বের বিষয়টি কারও অজানা নেই। দিলীপ শিবির মনে করছে, নাড্ডার যে ‘চক্রব্যূহ’ সতর্কবাণী সেটা রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির অর্থাৎ মালব্য-অমিতাভ-শুভেন্দুদের দিকেই কি ইঙ্গিত রয়েছে? গত কয়েকদিন ধরেই ‘সিবিআই সেটিং’ তত্ত্বে অনড় দিলীপের মন্তবে্য প্রবল আলোড়ন তৈরি হয়েছে রাজ্য বিজেপিতে।
[আরও পড়ুন: বিহারের আস্থাভোটে বড়সড় জয় নীতীশ কুমারের, ওয়াকআউট করল বিজেপি]
সূত্রের খবর, বিষয়টি শীর্ষনেতৃত্বের নজরে আনেন সুকান্ত মজুমদার, অমিত মালব্যরা। এরপরই গত সোমবার নাড্ডা ফোন করে সতর্ক করেন দিলীপ ঘোষকে। জানা গিয়েছে, সিবিআই সেটিং নিয়ে তিনি কী বলেছেন তা দিলীপবাবু পুরোটা শোনান নাড্ডাকে। এরপরই তাঁকে নাড্ডার পরামর্শ তৈরি হওয়া ‘চক্রব্যূহ’ থেকে সতর্ক থাকার জন্য। গত কয়েকদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে একের পর বিতর্কিত মন্তব্য করে রীতিমতো ব্যাট চালিয়ে খেলছেন দিলীপ ঘোষ। কখনও দলবিরোধী তো কখনও তাঁর নিশানায় দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI) সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের সেটিং তত্ত্বের পর রাজ্য নেতৃত্বকেও নিশানা করেছেন তিনি। কলকাতায় দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জিতে দেখাতে পারবে না বলেও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। দলের বর্ষীয়ান নেতার এহেন মন্তব্যে ফের অস্বস্তিতে পড়ে যান রাজ্য নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন:মুসলিমদের উচিত ওঁকে দেখামাত্র মারা, পয়গম্বর বিতর্কে বিজেপি বিধায়ককে নিশানা কংগ্রেস নেতার]
সূত্রের খবর, রাজ্যের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কাজকর্মে অসন্তুষ্ট প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। দল যেভাবে চলছে তাতে আখেরে রাজনৈতিকভাবে দলের লাভের থেকে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। রাজ্যে দলের সংগঠন যেভাবে ভেঙে পড়েছে তাতে খুশি নন বঙ্গ বিজেপির সফল সভাপতি হিসাবে পরিচিত দিলীপ ঘোষ। দলের আদি-নেতা কর্মীদের দাবি, দিলীপ ঘোষকে কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে রাজ্য বিজেপিতে (BJP)। দলের বর্তমান ক্ষমতাসীন শিবিরের দিকেই তারা অভিযোগের আঙুল তুলেছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, দিলীপ ঘোষকে কোণঠাসা করতে কি তাঁর বিরোধী শিবিরই ‘চক্রব্যূহ’ তৈরি করছে?