‘খুন করতেই পারে না আরিফ’, যাদবপুর ছাত্রমৃত্যুতে ভাই গ্রেপ্তার হতেই কলকাতায় কাশ্মীরের মারুফ

09:06 AM Aug 18, 2023 |
Advertisement

অর্ণব আইচ: খুন করতে পারে না আরিফ। এসব বাজে কথা। মাঝেমধ্যেই আরিফ দাদা মারুফকে বলতেন কাশ্মীর থেকে কলকাতায় এসে ঘুরে যেতে। মারুফও গত কয়েক বছরের মধ্যে অনেকবার ভেবেছেন, আসবেন কলকাতায়। এসে ক’টা দিন কাটাবেন ভাই আরিফের সঙ্গে। কিন্তু ভাবতেও পারেননি যে, উৎকণ্ঠা নিয়ে আসতে হবে কলকাতায়। সোজা যেতে হবে যাদবপুর থানায়। ভাইকে দেখতে হবে থানার লকআপের অন‌্যদিকে। যাদবপুরের মেন হস্টেলে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ‘খুনে’র অভিযোগে বুধবার সকালে পুলিশের হাতে যে ক’জন ছাত্র গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের মধ্যেই একজন হচ্ছে মহম্মদ আরিফ।

Advertisement

কাশ্মীরে পাহাড় ও সবুজ পাইন বন ঘেরা ডোডা জেলার উপত‌্যকায় বাড়ি আরিফের। বাবা মজুরের কাজ করেন। কিন্তু ছেলেকে বড় করার জন‌্য কোনও কার্পণ‌্য দেখাননি। বরাবরই খুব ভাল ছাত্র আরিফ। তিন বছর আগে জয়েন্টে ভাল ফল করে যাদবপুরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পায়। কাশ্মীর থেকে চলে আসে কলকাতায়। মেন হস্টেলে থাকতে থাকতেই হস্টেলের ‘দাদা’ সৌরভ চৌধুরীর দলে গিয়ে ঢোকে। আর তারই মদতে জুনিয়ররা হস্টেলে এলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আরিফও অংশ নিত র‌্যাগিংয়ে। ওই নাবালক ছাত্র উপর থেকে পড়ার পর আরিফ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে নিয়ে গিয়েছিল বেসরকারি হাসপাতালে। জেরার মুখে পুলিশকে আরিফ জানায়, ওই ছাত্রটিকে লাফ দিতে দেখে সে হাত বাড়িয়ে ধরতে যায়। কিন্তু হাত ফসকে ছাত্রটি তিনতলার বারান্দা থেকে নিচে পড়ে যায়। কিন্তু অন‌্য ছাত্ররা জেরার মুখে এই তথ‌্য জানায়নি। তাতেই সন্দেহ সৃষ্টি হয় পুলিশের। সে যে সরাসরি র‌্যাগিংয়ে অংশগ্রহণ করে, তা প্রমাণিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

[আরও পড়ুন: দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রকে ইউনিয়ন রুমে ডেকে মারধর! অশোকনগর কলেজে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্য]

এদিনই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন আরিফের দাদা মারুফ। সঙ্গে এক খুড়তুতো ভাই। যাদবপুর থানার বাইরে তিনি জানান, তাঁরা কিছুই জানতেন না। দু’দিন আগে তাঁদের কাছে যাদবপুর থানা থেকে ফোন আসে। থানার এক আধিকারিক জানান, তাঁর ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তা-ও খুনের অভিযোগে। শুনে পরিবারের লোকেরা আকাশ থেকে পড়েন। কারণ, আরিফের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তাঁদের পরিবারটি। কলকাতায় আসার আগে আরিফ বাবাকে বলেছিল, সে একবার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেলে পরিবারের কোনও ভাবনা থাকবে না। তাই উৎকণ্ঠা ও হতাশায় ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। যদিও অভিভাবকদের আশ্বাস দিয়ে তড়িঘড়ি কলকাতায় ছুটে আসেন দাদা মারুফ। তাঁর দাবি, ভাই কোনও খুন করতে পারে না। কোথাও ভুল হচ্ছে। তাঁরা গ্রেপ্তারির নথি জোগাড় করছেন।  তাঁরা কলকাতার কিছু চেনেন না। তবে তাঁরা আইনি লড়াই লড়বেন।

[আরও পড়ুন: ধূপগুড়ি উপনির্বাচন: মনোনয়নেও প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, রাস্তায় ফেলে মারধর প্রাক্তন সহ-সভাপতিকে]

Advertisement