সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ফের রাজ্য বনমহোৎসবে জোড়া সম্মান জঙ্গলমহলের। রূপসী বাংলা পুরস্কার ২০২৪-র দুটি বিভাগেই বনমহলের মুকুটে সেরার পালক। বনসৃজনের মাধ্যমে দূষণমুক্ত সবুজ পরিবেশ গঠন ও উন্নয়নের কাজে দৃষ্টান্তমূলক অবদানে প্রথম হয় পুরুলিয়া বনবিভাগের ঝালদা বনাঞ্চলের কলমা বিটের কাঁসরা-জুড়াটার মৌজার জঙ্গল। ২০ হেক্টর এলাকা জুড়ে শাল গাছের জঙ্গল গড়ে তা বাঁচিয়ে রাখায় পুরুলিয়ার ঝালদা বনাঞ্চলের ওই বিট এই পুরস্কার পেল। অন্যদিকে এই রূপসী বাংলা পুরস্কারে আরেকটি বিভাগ বন সম্পদের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির দ্বারা যৌথ বন পরিচালনার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রথম পুরস্কার পেল পশ্চিম মেদিনীপুরের রূপনারায়ন বিভাগের বারাসল যৌথ বন পরিচালন কমিটি। এই বিভাগে পুরস্কারে ওই যৌথ বন পরিচালন কমিটিকে ১ লাখ টাকার চেক তুলে দেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। একইভাবে সামাজিক বনসৃজনের ক্ষেত্রে ওই পুরস্কারে পুরুলিয়ার কলমা বিটকে স্মারক তুলে দেন ওই মন্ত্রী।
রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে রাজ্যের বনমহোৎসবের অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার গুলি তুলে দেওয়া হয়। বনসৃজনে সেরার সম্মান নিতে কলকাতা গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার ঝালদা বনাঞ্চলের আধিকারিক অপূর্ব মাহান্তি ও কলমার বিট অফিসার রামবিলাস হাঁসদা। পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ জানান, "বেশ কয়েক বছর ধরেই রূপসী বাংলা পুরস্কার পেয়ে আসছে পুরুলিয়া। এবার বনসৃজনে ঝালদা বনাঞ্চলের কলমা বিট এই পুরস্কার পেল।" বনসৃজন বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে বাঁকুড়া দক্ষিণ বিভাগের বাঁকুড়া বনাঞ্চলের পুনিশোলের দলদলি। এখানে ৫২ হেক্টরের বনসৃজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বনদপ্তর। এই বনসৃজনে রয়েছে আকাশমনি নিম গাছ। এই গাছ দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পায়। এই বিভাগের তৃতীয় পুরস্কার পেল শিলিগুড়ি বন বিভাগের নকশালবাড়ি সামাজিক বনায়ন বিটের পূর্ব তেরাই সামাজিক বনায়ন। ২০১৯-২০ আর্থিক বছর থেকে পাঁচ বছর ধরে জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রাখায় এই বনসৃজনের সম্মান।
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে আরও পিছোল DA মামলার শুনানি, অপেক্ষা আরও বাড়ল রাজ্য সরকারি কর্মীদের]
যৌথ সম্পদ সৃষ্টি বা বন সম্পদের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে পানবারি বনবস্তি, বিটিআর পশ্চিম বিভাগ। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে দার্জিলিং বিভাগের মধ্য লামহাটা যৌথ বন পরিচালন কমিটি। এই পুরস্কারের ক্ষেত্রে প্রথমকে ১ লাখ, দ্বিতীয়কে ৭৫ হাজার, ও তৃতীয়কে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। কয়েক বছর ধরেই জঙ্গলমহলের বনবিভাগগুলি বনসৃজন ও বনসম্পদের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে নজর কেড়েছে। তারমধ্যে অগ্রনী পুরুলিয়া। গত বছর বনসম্পদের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে বাঘমুণ্ডি বনাঞ্চলের নিশ্চিন্তপুর সেরার শিরোপা পায়। অন্যদিকে বনসৃজনে সেরার খেতাব পায় বাঁকুড়া দক্ষিণের পুনিশোল-ই। গতবারও বনসৃজনে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছিল শিলিগুড়ি সোশ্যাল ফরেস্ট্রি বিভাগ।