ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের পর এবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। ফের রোগীর পরিবারের হাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠল। আর এই ঘটনায় ফের আতঙ্কিত চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশ। অভিযোগ, হেনস্তার সময় পুলিশ হাসপাতালে থাকলেও নিষ্ক্রিয় ছিল। এই ঘটনায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে জানাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এনিয়ে বেনিয়াপুকুর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
থানায় এফআইআর দায়ের চিকিৎসকদের।
ঘটনা রবিবার ভোররাতের। ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতে গভীর ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন এক রোগী। সঙ্গে ছিলেন আত্মীয়রা। সেসময় জরুরি বিভাগের সার্জারি ওয়ার্ডে ছিলেন ৫ ইন্টার্ন চিকিৎসক। রোগীর হাতের ক্ষত পরীক্ষা করে তাঁরা জানান, অপারেশন করাতে হবে। তাতে রাজি হননি পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, এখনই অপারেশন নয়, ব্যান্ডেজ বেঁধে দিতে হবে ক্ষতস্থানে। চিকিৎসকরা জানান, এই পরিস্থিতিতে তা সম্ভব নয়। তা শুনে মেজাজ হারান পরিবারের সদস্যরা। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে শুরু হয় বাকবিতন্ডা। অভিযোগ, ডাক্তারদের উদ্দেশে অশ্রাব্য গালিগালাজের পর প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। তাঁরা সকলে মদ্যপ ছিলেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ গিয়ে তা সামাল দেয়। ততক্ষণে হাসপাতাল চত্বরে রীতিমতো অশান্তকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এনিয়ে আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, এই ঘটনার সময় পুলিশ আশেপাশে থাকলেও নিষ্ক্রিয় ছিল। সময়মতো পরিস্থিতি সামলানো হয়। আর তাতেই তাঁদের প্রশ্ন, পুলিশ থাকলেও যদিও এভাবে হেনস্তার মুখে পড়তে হয়, তাহলে লাভ কী? নিরাপত্তার অভাবে কাজে আপত্তি তুলছেন তাঁরা। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের পর এই মুহূর্তে নিরাপত্তা ইস্যুতে ফের কর্মবিরতির পথে হাঁটতে চলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। চলতি সপ্তাহে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজেও একইভাবে রোগীর পরিবারের হাতে আক্রান্ত হতে হয়েছিল মহিলা চিকিৎসক, নার্সদের। এবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। ফলে সবমিলিয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসদের নিরাপত্তা অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু হচ্ছে, বলাই বাহুল্য।