সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনশন প্রত্যাহার নয়। তবে নবান্নে বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রায় ঘণ্টাতিনেক জিবি মিটিংয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার। বলে রাখা ভালো, আগামিকাল বিকেল ৫টায় নবান্নে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ১০ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসার সময় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অনশন প্রত্যাহার করে তবেই বৈঠকে যোগ দেওয়া যাবে বলে ই-মেলে আন্দোলনকারীদের জানিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তবে অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে এককাট্টা জুনিয়র ডাক্তাররা। এই পরিস্থিতিতে আদৌ হবে বৈঠক, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
তিনি বলেন, "অনশনকারীদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাই এখনই অনশন প্রত্যাহার নয়। তবে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাই। তাই নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আমাদের প্রতিনিধিরা নবান্নে পৌঁছে যাব।" আন্দোলনকারীদের আশা, সোমবারের বৈঠক সদর্থক হবেই। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ যে সম্ভব নয়, তা শুক্রবারই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তা সত্ত্বেও রবিবার জিবি মিটিংয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবাশিস আরও বলেন, "শিশুসুলভ জেদ থেকে আমরা এসব করছি না। আমরা স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ চাইছি। সেটা জেদের জায়গা নয়। আমাদের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে। আমরা সেগুলো জোগাড় করছি। দেব।" জিবি মিটিংয়ের পরই দশ দফা দাবি উল্লেখ করে মুখ্যসচিবকে ই-মেল পাঠান জুনিয়র ডাক্তাররা।
গত ৯ আগস্ট, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনায় সুবিচার-সহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে শামিল জুনিয়র ডাক্তাররা। এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কেপিসি মেডিক্যালের সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, কলকাতা মেডিক্যালের স্নিগ্ধা হাজরা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই, শিশুমঙ্গলের পরিচয় পাণ্ডা, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের রুমেলিকা কুমার, মেদিনীপুর মেডিক্যালের স্পন্দন চৌধুরী এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সন্দীপ মণ্ডল বর্তমানে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
একটানা ১৬ দিন ধরে অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অনশনের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন কলকাতা মেডিক্যালের তনয়া পাঁজা এবং অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, এনআরএসের পুলস্ত্য আচার্য, উত্তরবঙ্গের সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অলোক বর্মা। তাঁদের মধ্যে অনিকেত, অনুষ্টুপ ও পুলস্ত্য হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। যাঁরা এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। তাই অনশনকারীরা সোমবার নবান্নের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন না বলেই জানান দেবাশিস।