শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: আইনের শাসক হলেও আমজনতার কাছের মানুষ হিসেবে তিনি সুপরিচিত। ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে তাঁর যে প্রয়াস, তার জোরে তাঁকে অনেকেই ‘মানুষের ভগবান’ বলেন। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) তাই আদালতের বাইরে প্রায়শয়ই মিশে যান সাধারণের সঙ্গে। এবার তিনি ঢুঁ মারলেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) একটি ক্যাফেতে। বুধবারের শীতসন্ধ্যায় সেই ক্যাফেতে গিয়ে আর পাঁচজনের মতোই মেনুকার্ড দেখে খাবারের অর্ডার দিলেন। খেলেন ফ্রায়েড মোমো (Fried Momo)। আর তাঁকে এভাবে দেখে রীতিমতো তাজ্জব ক্যাফে কর্তৃপক্ষ থেকে ক্রেতারা।
কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের কাজে এই মুহূর্তে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রয়েছেন জলপাইগুড়িতে। শুক্রবার পর্যন্ত থাকবেন সেখানে। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। এর মধ্যে বুধবার সন্ধেবেলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পৌঁছে যান একটি ক্যাফেতে (Cafe)। সেখানে তখন বসে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা দিচ্ছিলেন অনেকেই। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সেখানে হাজির হতে দেখে প্রথমে সকলেই চমকে যান। এমনকী ক্যাফে কর্তৃপক্ষও খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। এমন একজনকে ক্যাফের অতিথি হিসেবে দেখে বুঝত পারছিলেন না কীভাবে আপ্যায়ণ করবে।
[আরও পড়ুন: ‘মধ্যপ্রদেশের ধর্মস্থানে নিষিদ্ধ লাউডস্পিকার’, মসনদে বসেই সিদ্ধান্ত ‘সংঘ ঘনিষ্ঠ’ মুখ্যমন্ত্রীর]
তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কিন্তু আম আদমির মতোই ছিলেন। ক্যাফের টেবিলে বসে মেনুকার্ড নিয়ে অর্ডার দেন ফ্রায়েড মোমো। জলপাইগুড়ির এই ক্যাফে বেশ আধুনিক। এখানে ছোট্ট একটি লাইব্রেরিও (Library) আছে। খাওয়াদাওয়া, আড্ডার পাশাপাশি পড়াশোনা করা যায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ও সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন। খাবারের অর্ডার দেওয়ার পর তিনি টেবিল থেকে উঠে লাইব্রেরিটি ঘুরে দেখেন। বইপত্র নিয়ে নাড়াচাড়াও করেন। এর পর টেবিলে ধোঁয়া ওঠা ফ্রায়েড মোমো সার্ভ করা হলে তা জমিয়ে খান। প্রশংসাও করেন। শুধু তাই নয়, ক্যাফের কর্মী ও উপস্থিত জনতার আবদার মেনে সেলফিও তোলেন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: কেউ হারালেন স্ত্রী, কারও বন্ধুবিয়োগ, বর্ধমান স্টেশনে ট্যাঙ্ক ভেঙে ৩ প্রাণহানির দায় নেবে কে?]
শুধু এখানেই নয়। এর আগে কলকাতা বইমেলা থেকে পুরুলিয়া আদালতের জলের কল উদ্বোধন-সহ একাধিক জায়গায় ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ করতে দেখা গিয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এবার তিনি সাধারণ মানুষের মতো জলপাইগুড়ির ক্যাফেতে ঢুকে খাওয়াদাওয়া সারলেন।