গোবিন্দ রায়: বাবা স্কুলের প্রধানশিক্ষক। সেই স্কুলেই চাকরি করেন ছেলেও। অভিযোগ, তাঁর নিয়োগও হয়েছে বেআইনিভাবে। অন্য শিক্ষকের সুপারিশপত্র জাল করে চাকরি পেয়েছেন তিনি। এই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিল সিআইডি। ‘ভুয়ো’ শিক্ষকেরা ছাত্রদের জন্য ভয়ংকর বলেই মত বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের স্কুলে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দেয় সিআইডি। DIG CID বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর কাছে রিপোর্ট জমা দেন। অভিযুক্তদের হাতের লেখায় কোনও মিল আছে কিনা, তা দেখতে QHDE কে দায়িত্ব দিয়েছে সিআইডি। রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার তরফে ইতিমধ্যেই সুতি থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। ৪৬৮, ৪৭১, ৪০৯ ধারায় এফআইআর রুজু হয়েছে। বিভিন্ন অফিস থেকে তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আমি জানি কী করে কী করতে হয়’, নাম না করে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ফের হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর]
অভিযুক্ত অনিমেষ তিওয়ারি এবং আশিস তিওয়ারি-সহ যাদের সঙ্গে সই মিলতে পারে সেই তথ্য পাঠানো হয়েছে। যে সময় অনিমেষ চাকরি পেয়েছিলেন, তৎকালীন DI-এর সই পাঠানো হয়েছে কোশ্চেন হ্যান্ডরাইটিং ডকুমেন্টস এক্সামিনেশন ব্যুরোয়। সেই সময়ের ডিআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিআইডির আইনজীবীর মন্তব্য শোনার পর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু প্রশ্ন করেন, “কাউকে কী গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি? স্কুলে কেন যাচ্ছেন প্রধানশিক্ষক? যত কম যাবেন ছাত্রদের মঙ্গল। এরা ছাত্রদের জন্য ভয়ংকর।” আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের সুতির ১ নম্বর ব্লকের গোথা এয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ছেলে অনিমেষ তিওয়ারি। তিনি ওই স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন। বাবার স্কুলেই ছেলের চাকরি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অন্যের সুপারিশ এবং নিয়োগপত্র জাল করে বাবার স্কুলে চাকরি করতেন অনিমেষ। নিয়োগপত্রের মেমো নম্বর এক রেখে অনিমেষ নিজের নাম নিয়োগপত্রে বদলে নেন বলেই অভিযোগ। আরটিআইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনিমেষের বাবা জানান তাঁর ছেলে গোথা এয়ার স্কুলের কর্মশিক্ষার শিক্ষক। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে যাঁর সুপারিশ এবং নিয়োগপত্র জাল করলেন অনিমেষ, তিনি এই মুহূর্তে কী করছেন? পরে যদিও জানা যায় ওই ব্যক্তি বর্তমানে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলে চাকরি করেন।