চৈতালী বক্সি: পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন কবীর সুমন। সাংবাদিক সম্মেলন করে বলে দিয়েছিলেন, ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ মনোভাব থেকেই গীতশ্রীকে পদ্মশ্রী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিল কেন্দ্র! তাঁর ভারতরত্ন পাওয়া উচিত। সেই বিতর্ক এখনও টাটকা। আর তারই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধেয় এল দুঃসংবাদ। সুরলোকে পাড়ি দিলেন সন্ধ্যা। কিন্তু তাঁর প্রয়াণে বিশেষ কিছুই বলতে চাইলেন না কবীর সুমন (Sandhya Mukherjee)।
করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভুগছিলেন নানা শারীরিক সমস্যাতেও। দিন কয়েক আগেই সফলভাবে ভেঙে যাওয়া ফিমার বোনে অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু সমস্ত লড়াইয়ে ইতি ঘটিয়ে এদিন কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ চিরবিদায় নিলেন গীতশ্রী। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সংগীত জগৎ। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ সামনে আসার পরই শিল্পী কবীর সুমনের (Kabir Suman) সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটাল। ফোন ধরে তিনি বলেন, “সালাম ওয়ালেকুম। মার্জনা করবেন, মার্জনা করবেন, মার্জনা করবেন। আমি কোনও মতামত দিতে পারব না।”
[আরও পড়ুন: Sandhya Mukherjee: ‘আমি এখনও মনে করি সন্ধ্যাদি ভারতরত্ন’, গীতশ্রীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ মুখ্যমন্ত্রী]
পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সে সময় কবীর সুমন জানিয়েছিলেন, ‘গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ভারতরত্ন পাওয়া উচিত। যে ভারত সরকার গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখালো, আমি কবীর সুমন, তাদের জুতো পেটা করতে চাই। আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া এটাই। আমার এ মন্তব্য শোনার পর কেউ গ্রেপ্তার করতে পারেন। মানহানির মামলা করতে পারেন। তাতে আমি বিন্দুমাত্র ভয় পাচ্ছি না। বাংলার সন্তান আমি। নিজেকে বাঙালি বলতে গর্ব বোধ করি। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সারা বিশ্বের বাঙালির গর্ব। তাঁকে ছোট করে বাঙালিকে হেয় করলো এই সরকার। রাম শ্যাম যদু মধু পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ। আর গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় স্রেফ পদ্মশ্রী! এই কেন্দ্রীয় সরকার নির্লজ্জ নয় তদুপরি বেহায়া’। পরে সাংবাদিক বৈঠকেও কবীর সুমনের গলায় শোনা গেল সেই সুর।
অতীতে বহুবার সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেছেন কবীর সুমন। কিন্তু তাঁর প্রয়াণে কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে চাইলেন না। তিনি শোকাহত নাকি যে কোনওরকম বিতর্কে এড়াতেই ফোনে সেভাবে কিছু বলতে চাইলেন না, তা অবশ্য স্পষ্ট হল না।