ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাকপুর: জনপ্রিয় তরুণ নেতার আকস্মিক মৃত্যু। গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে খুন। টিটাগড় পুরসভার বিজেপি (BJP) কাউন্সিলরের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে ক্ষোভে ফুঁসছেন দলীয় কর্মী, সমর্থকরা। সকাল থেকে বারাকপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধে নেমেছেন তাঁরা। টিটাগড়, শ্যামনগর, আমডাঙায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলছে অবরোধ। কোথাও কোথাও আটকানো হচ্ছে গাড়িও। রাস্তায় বসে তুমুল প্রতিবাদ চলছে, উঠছে স্লোগান।
এই অবস্থায় সোমবার বেলার দিকে মণীশ শুক্লার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তাঁর বাড়ি যান কৈলাস বিজয়বর্গীয় (Kailash Vijayvargiya), মুকুল রায়রা। সব শোনার পর স্পষ্টতই তাঁরা জানান, রাজ্য পুলিশের তদন্তে আস্থা নেই। সিবিআই (CBI) বা অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে। এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে ছিলেন মুকুল রায়, অর্জুন সিং, শঙ্কুদেব পণ্ডা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা প্রকাশ করেন। সবরকম সাহায্যের পাশাপাশি সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের ‘ওবিসি’ তালিকায় নাম থাকলেই কেন্দ্রের চাকরিতে সংরক্ষণ নয়, জানাল কলকাতা হাই কোর্ট]
বাড়ি থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় স্পষ্টই জানান, ”বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তদন্তে ভরসা নেই। কারণ, এটা মনোজ বর্মা, অজয় ঠাকুরের ষড়যন্ত্রেই ঘটেছে। সিবিআই বা যে কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি করছি।” অর্থাৎ দলের যুব নেতা তথা কাউন্সিলর খুনে সরাসরি পুলিশের যোগ আছে বলেই অভিযোগ তুলে দিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এছাড়া বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্রও সাংবাদিক বৈঠকে মণীশকে খুনের নেপথ্যে পুলিশের ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেছেন। পুলিশের ভূমিকার তদন্তে হোক CBI কে দিয়ে, দাবি তাঁর।
[আরও পড়ুন: ফালাকাটায় সরকারি বাস ও গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ, পথের বলি একই পরিবারের ৫]
তাঁর এই বিবৃতির পরই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ টুইট করে বিবৃতি দেয়। জানানো হয় যে, বারাকপুর গতরাতে একজন খুন হয়েছেন, তদন্ত চলছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই অবস্থায় যথাযথ তথ্য, প্রমাণ ছাড়া কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। তাতে তদন্তেরই ক্ষতি হবে।
অন্যদিকে, এখনও মণীশ শুক্লার দেহ রয়েছে এনআরএস হাসপাতালের মর্গে। সেখানে রবিবার রাতে দেহটি পাঠানো হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। সেখানে দেহ আনতে গেলে হাসপাতালের গেটে আটকে দেওয়া হয় বিজেপি পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকে। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যান্য নেতা, কর্মীদেরও যেতে দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে এনআরএসের সামনে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা কাটাকাটি চলে তাঁদের। ইতিমধ্যে সেখানে পৌঁছে যান মণীশের পরিবারের সদস্যরা, পৌঁছন অর্জুন সিং, কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বাধা দেওয়া হয় তাঁদেরও। ঘণ্টাখানেক তর্কবির্তকের পর পরিবারের ২ জন নেতা-সহ পরিবারের সদস্যদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।