নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজোয় যেন একেবারেই জৌলুসহীন। যে প্রতিমা গতবছর সেজে উঠেছিল ৫৭০ ভরি সোনার গয়না, এবার সেজেছে মাত্র ৪০ ভরিতে। কাঁটছাট হয়েছে মেনুতেও। পুজোর আয়োজন চলছে, সেজে উঠেছেন প্রতিমা, কিন্তু যেন কোথাও একফোঁটাও আনন্দ নেই।
রাতে শ্যামা মায়ের পুজো। তার আগে সোমবার দুপুরে বোলপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসে সাজানো হয়েছে প্রতিমা। তবে উধাও ভারী ভারী গয়না। শুধুমাত্র কিছু হার, সোনার চেন, চারহাতে চারটি বালা, টিকলি, টায়রায় সাজানো হয়েছে প্রতিমা। গত বছর পর্যন্ত যে জাঁকজমক ছিল, ফুলে ফুলে সাজতো পার্টি অফিস, সে সব এবার নেই। অতিথিদের প্রসাদে আগে থাকত খিচুড়ি, বলির মাংস, তিনরকম ভাজা, মিক্সড তরকারি, চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি। এবার বেশ কিছু পদও কমেছে। কমেছে আমন্ত্রিতের সংখ্যাও। অনুব্রত মণ্ডল যেখানে পুজোর রাতে আসা সকলকে যত্ন করে খাওয়াতেন সেখানে এবারের আয়োজন শ’তিনেকের।
[আরও পড়ুন: সন্ধে হতেই ভেসে আসে শিশুর আর্তনাদ, নূপুরের শব্দ! অশরীরী আতঙ্কে কাঁটা বাঁকুড়ার এই গ্রাম]
বিকেলেই হাজির হয়েছেন দলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমাদের অভিভাবক নেই। বড় শূন্য লাগছে। তবু তাঁর নির্দেশে সকলে চাঁদা দিয়ে মায়ের পুজোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা হচ্ছে। মাকে যতটা না সাজালেই নয়, ততটা পুরোহিত মশাই সাজিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে নিজের হাতে এই কালীপুজো শুরু করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। দিন দিন বেড়েছে সেই পুজোর জাঁকজমক। ২০১৮ সালে কালী প্রতিমা সাজানো হয়েছিল ১৮০ ভরি সোনার গয়নায়। ২০১৯ সালে গয়নার পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ২৬০ ভরি। ২০২০ সালে সেই প্রতিমা সাজানো হয়েছিল প্রায় ৩০০ ভরি গয়না দিয়ে। ২০২১ সালে তৈরি হয় সোনার মুকুট। প্রতিমার সোনার গহনা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭০ ভরিতে। সীতাহার, চেন, গলার চিক, চূড়, রতনচূড়, মান্তাসা, বাজুবন্ধ, টায়রা-টিকলিও রয়েছে দেবীর। কিন্তু অনুব্রতকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই সিবিআইয়ের নজরে দেবীর ৫৭০ ভরি সোনার গয়না।