দেব গোস্বামী, বোলপুর: নেই কেষ্ট। তাই এবারেও তৃণমূলের (TMC) কালীপুজো জৌলুসহীন। জাঁকজমকহীন অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজোর আয়োজন। চাঁদা তুলেই হচ্ছে পুজো। ৫৭০ ভরি সোনা দিয়ে প্রতিমাকে সাজানো কিংবা বিপুল খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারই থাকছে না। যৎসামান্য গয়না পরানো হবে প্রতিমাকে। নমো নমো করেই এবার অনুব্রতহীন বীরভূমে কালীপুজো (Kali Puja) হচ্ছে দলীয় কার্যালয়ে।
গত বছরের মতই এবছরও দুর্গাপুজো ও কালীপুজো কেটেছে জেলে। দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দ্রুত মুক্তির আশা দেখছেন না অনুগামীরা। ফলে বোলপুরে অনুব্রতহীন কালীপুজো এবার আড়ম্বরহীন। বীরভূমের তৃণমূল নেতৃত্বের দলীয় বৈঠকে ঠিক হয়, অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে ঐতিহ্য মেনে সকলে চাঁদা দিয়ে পুজো করবেন। কালীপুজোয় অনুব্রত নিজে কোনও বছর চাঁদা তোলেননি। বোলপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে যে পুজো হয়, সেটা কেষ্টর কালীপুজো হিসাবেই জানেন সকলেই। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই পার্টি অফিসে সেই পুজো করে আসতেন। কোনও দিন ছেদ পড়েনি তাতে। এবারেও তাঁকে ছাড়ায় তাঁরই প্রতিষ্ঠিত কালীপুজো করতে হচ্ছে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের। অনুব্রতর অনুপস্থিতির প্রভাব পড়েছে এবারেও মাতৃ আরাধনায়।
[আরও পড়ুন: এক ফ্রেমে দেব-সোহম-অঙ্কুশ! কোন ছবিতে থাকছে টলিউডের এই সুপারস্টার ত্রয়ী?]
অনুব্রতর কালী প্রতিমার বিশেষ আকর্ষণ ছিল সোনার গয়না। ২০১৮ সালের এই কালীপুজোয় প্রতিমার স্বর্ণালঙ্কার (Gold Ornaments) ছিল ১৮০ ভরি, ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি, ২০২০ সালে ৩৬০ ভরি। আর ২০২১ সালে একলাফে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৭০ ভরির গয়নায় সাজানো হয়েছিল প্রতিমাকে। সোনা নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একসময় তৎপর হয়ে ওঠে ও চর্চায় উঠে আসে। অনুব্রতর কালীপুজো অন্যান্য কালীপুজোর মতই বিখ্যাত। মায়ের সাজ, আয়োজন, জাঁকজমক সবই নজরকাড়া ছিল প্রতি বছর। পুজোয় উপস্থিত থাকতেন বহু দলীয় কর্মী-সমর্থকরা।
[আরও পড়ুন: চাঁদনি চকে ফের অগ্নিকাণ্ড, কালো ধোঁয়ায় ঢাকল গোটা এলাকা]
তবে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিয়মটুকু মেনেই পুজো করা হচ্ছে। সশরীরে না থেকেও বোলপুরের বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেলের হোডিং ও ফ্লেক্সে স্বমহিমায় অনুব্রতর উপস্থিতি। কর্মীদের কথায়, “শ্যামবর্ণা দক্ষিণা কালীমূর্তিকে প্রতিবছরের মত এবছরও অঙ্গরাগ ও আভূষণ সজ্জায় সাজানো হবে। তবে নামমাত্র গয়না থাকবে।” বোলপুরের (Bolpur) বিধায়ক তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, “পুজো যেমন হয় তেমনি হবে। কোর কমিটি ও জেলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও দলীয় কর্মী-সমর্থকরা দায়িত্ব নিয়ে এবছর পুজোর আয়োজন করবেন।” তৃণমূলের জেলার কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “কালীপুজোকে নিয়ে বোলপুর শহর জুড়েই বেশ কয়েক বছর ধরেই আবেগ তৈরি হয়েছে। কেষ্টকালী নামেই পরিচিতি লাভ করেছে। অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতি কর্মী-সমর্থকদের মনে কাজ করলেও পুজোর আয়োজনের সব রকম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।” তবে এবারেও কেষ্ট নেই। তাই কালীপুজোয় জৌলুস কি ফিরবে? সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন সকলে।