shono
Advertisement

Kali Puja 2023: নরবলি থেকে শ্রীরামকৃষ্ণের উপস্থিতি, জানুন বাগবাজারের সিদ্ধেশ্বরী কালীর ইতিহাস

পুজোর আগে চানাচুর আর কারণবারিতে আজও মজেন পুরোহিত!
Posted: 03:08 PM Nov 06, 2023Updated: 02:12 PM Nov 07, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু কাল আগে এই মন্দিরে এসে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ”ওরে এই মা সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। তোদের যা যা কামনা তাই তিনি পূর্ণ করতে পারেন।” কলকাতার কালী ইতিহাস ছাড়িয়ে গঙ্গাপাড়ের ভবতারিণীর উপাসকের এমন উক্তিই বলে দেয় বাগবাজারের এই কালীর মাহাত্ম্য।

Advertisement

উত্তর কলকাতার কুমোরটুলির কাছে রবীন্দ্র সরণিতে রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি (Sidheswari Kali Mandir, Bagbazar) । যে কালীকে ‘কালীবরের কালী’ হিসাবেও চেনেন কেউ কেউ। আবার অনেকেই বলেই, এই সিদ্ধেশ্বরী কালী আসলে ডাকাত কালী! দেবীর এই একাধিক নাম আর রূপ বিভাজনের মধ্যেও তাই আজও বিবর্তিত হয় একাধিক কথকতা। বাগবাজারের এই কালীকে ঘিরে আজও আলোচিত হয় হাড়হিম বহু কথার!

কথিত আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে তপস্বী কালীবর নামের এক শক্তি উপাসক হিমালয়ের কোনও এক গুহায় উপাসনা করতেন। একদিন স্বপ্নাদেশ পান তিনি। দেবী কালী তাঁকে বলেন, গঙ্গার তীরের এক জঙ্গলে পড়ে রয়েছেন তিনি। তাঁকে সেখানেই পুজোর আদেশ দেন কালী (Kali Puja) । সেই স্বপ্নাদেশকে পাথেয় করে কালীবর চলে আসেন বাগবাজারের গঙ্গাপাড়ে। সেখানেই এক হোগলা বনের মধ্যে তিনি শুরু করেন দেবীর উপাসনা। ভক্তের পুজোয় তুষ্ট হন দেবী। তাঁর নির্দেশেই ওই স্থানেরই বেতবনে বসে কালীর মূর্তি। সেই দেবীর নাম হয় সিদ্ধেশ্বরী কালী।

[আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: গানের জোরে বন্ধ হয়েছিল নরবলি! প্রথা মেনে আজও রঘুডাকাতের পুজোয় মাতে হুগলিবাসী]

শোনা যায়, এই মূর্তি স্থাপনের পরে কিছুদিন কালীবরের হাতে দেবী পুজো পেলেও এরপর তাঁর ভক্তের নির্দেশে দেবীর পুজোর ভার বর্তায় এক সন্ন্যাসী কাপালিকের উপর। তিনিই গোলপাতার ছাউনির মন্দিরে শুরু করেন দেবীর আরাধনা। বিরাট গঙ্গা, জঙ্গলে ঘেরা মন্দিরে এরপর পুজো শুরু করে ডাকাতরা। মায়ের আরাধনায় দেওয়া হয় নরবলিও। কিন্তু এখানেও রয়েছে ভিন্ন কাহিনি।

বলা হয়, একদিন গঙ্গায় (Ganga River) ভেসে আসা দুই বালকের বলির কথা ভাবে ডাকাতদল। ঠিক তখনই ওই বালকদের বাঁচান কাপালিক। কথিত রয়েছে, দেবীর আশীর্বাদেই সম্পন্ন হয় ওই কাজ। পরবরবর্তীতে ওই বালকদের পরিবারের হাতেই পুজো পেতে শুরু করেন সিদ্ধেশ্বরী কালী।

[আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: পুজোয় বাজে বাঁশি-ভোগে ইলিশ, ‘সবুজ কালী’র মাহাত্ম্য জানলে চমকে যাবেন]

এক সময় ওই চক্রবর্তী পরিবারের হাত থেকে পুজোর ভার যায় বলাগড়ের মুখোপাধ্যায় পরিবারের হাতে। চক্রবর্তীদের বংশ লুপ্ত হওয়ায় তাঁদের আত্মীয়দের হাতেই পুজো পান দেবী। আজও সেই মুখোপাধ্যায় পরম্পরাই রয়েছে বাগবাজারের সিদ্ধেশ্বরী কালীর মন্দিরে।

সুসজ্জিতা দেবীমূর্তির পরনের বেনারসী থেকে শুরু করে হাতের খাড়া। সর্বত্রই রয়েছে একাধিক কাহিনির মিশেল। দীপান্বিতা অমাবস্যার মহা সমারোহে পুজো, দুর্গাপুজোর (Durga Puja) অষ্টমীতে দেবীর পোশাক বদলেও রয়েছে একাধিক রীতি। শোনা যায়, বাগবাজারের এই কালীর পুজোয় কারণবারি অন্যতম। শুধু পুজোয় নয়, পুরোহিত পুজোয় বসার আগেও নাকি চানাচুরের সঙ্গে কারণবারি পান করেন আজও।

শ্রীরামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে ‘বসুমতী সাহিত্য মন্দিরে’র প্রতিষ্ঠাতা উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। নাট্যজগতের গিরিশচন্দ্র ঘোষ থেকে তৎকালীন কলকাতার (Kolkata) বিখ্যাতদের আনাগোনা লেগে থাকত এই মন্দিরে। কুমোরটুলির মিত্র বংশের কালীভক্ত গোবিন্দরাম মিত্রর উদ্যোগে মন্দিরের চূড়া। পরবর্তীতে শ্যামলাল মল্লিক, বিনোদবিহারী মল্লিকের অর্থে মন্দিরের সংস্কার। সবক্ষেত্রেই রয়েছে নানাকথার মিশেল। যা আজও বিশ্বাসে ভর করেই বারবার বলে যায় এই কালীর (Kali) কথা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement