সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। এই নামে এখন বাংলার রাজনীতির রং মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। দলমত নির্বিশেষে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করছেন বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা। বুদ্ধবাবুর এই জনপ্রিয়তা শুধু অন্ধ ব্যক্তিপুজোর কারণে নয়। এমনই মনে করেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (Kamaleswar Mukherjee)।
ফেসবুকে পরিচালক ‘আজকের আলোচ্য বিষয়’ হিসেবে লেখেন, “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ব্যক্তিগত সততা বা আত্মত্যাগ নয়। আজও তাঁর তুমুল জনপ্রিয়তার কারণ স্রেফ অন্ধ ব্যাক্তিপুজোর কারণেও নয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে আগের জমানায় বামফ্রন্ট সরকার বেকারত্ব নির্মূল করার ক্ষেত্রে সময়ের থেকে এগিয়ে ভেবেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থে। এই নয়া উদার অর্থনীতি পরিচালিত বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক কাঠামোয় ‘মানুষের হাতে কাজ আসা’ বিষয়টাকে নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় অগ্রসর হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে দেশ ও রাজ্য জুড়ে বাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন আরও গতি পেত।”
[আরও পড়ুন: রণবীর-টোটার ‘ডোলা রে’ নাচ দেখে কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে ঝড়! কী বলছেন করণ জোহর?]
এরপরই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন কমলেশ্বর। লেখেন, “কিন্তু ‘চাষির জমি কেড়ে নেওয়ার’ বিষয়ে ডানপন্থী ও উগ্র বামেদের একতরফা অপপ্রচার ও বিরোধিতা, নির্বাচনে অসাধু উপায়ে অর্জিত বিপুল দেশীয় অর্থলগ্নি, বামবিরোধী রামধনু (অতিবাম থেকে অতিডান) জোট, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও বৈদেশিক অর্থানুকূল্য ও বামেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল। আজ এক যুগ পরে আপামর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত বাঙালি বুঝতে পারছেন যে সেই ডান ও অতিবাম রাজনীতির মৃগয়ায় তাঁরা ষড়যন্ত্রের ও স্বপ্নভঙ্গের নিরীহ শিকারে পর্যবসিত হয়েছেন। আজ জমি আছে – চাষি নেই, কারখানা বন্ধ – শ্রমিক পরিযায়ী, দুষ্কৃতীরাজ – গেরস্থের অকল্যাণ – একটা জগদ্দল অবস্থা। তাই দিশারী বুদ্ধ ভট্টাচার্যকে নিয়ে মানুষ উৎকণ্ঠিত – কোনো চাঁদমুখ আঁকা ‘সততার প্রতীক’ পোস্টার দেখে বা পয়সা ঢেলে কেনা বাজারি প্রচারের কারণে নয়।তবে এসব কথা চোর ডাকাত বা সুবিধেবাদীদের হজম না হওয়ারই কথা।”
এদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী চিকিৎসকরা। সোমবার সকালে তাঁর ফুসফুসে সিটি থোরাক্স করা হয়। সেই রিপোর্টে নতুন করে সংক্রমণ মেলেনি। ফুসফুসে জল জমারও কোনও আশঙ্কা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে দুপুর থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ধাপে ধাপে ভেন্টিলেশন (Ventilation) থেকে বের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।