বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ‘নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ’। প্রবাদ সত্য প্রমাণিত হয়েছে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে। তিপ্রা মোথা ভোট কেটে বিরোধী জোটের যাত্রাভঙ্গ করে বিজেপি। কর্ণাটকেও কি তার পুনরাবৃত্তি হবে? জল্পনা কংগ্রেসের অন্দরে। তবে কন্নড় রাজ্যে তিপ্রা মোথা নয়। কংগ্রেসের আশঙ্কা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জনতা দল সেকুলারকে নিয়ে। দলের রাজ্য সভাপতি ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর ভূমিকা নিয়ে সংশয়ে এআইসিসি। নিজেরা না জিতলেও কংগ্রেসের ভোটে ভাগ বসিয়ে গেরুয়া শিবিরকে তারা সুবিধা করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা কংগ্রেসের। সোমবার সন্ধেয় দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতা কর্ণাটকের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানেই জেডিএসের ভূমিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বলে সূত্রের খবর।
কর্ণাটকে লড়াই মূলত ত্রিমুখী। শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে কংগ্রেস ও জেডিএস। এছাড়াও ময়দানে রয়েছে এনসিপি, বিএসপি ও সিপিএম। যদিও এই তিনদলের প্রভাব দক্ষিণের এই রাজ্যে নামমাত্র। আবার রাজনীতিতে ‘হাওয়া মোরগ’ শব্দ অত্যন্ত প্রচলিত। অর্থাৎ হাওয়া বুঝে যাঁরা দলবদল করেন। ভোটের আগে কংগ্রেসে নাম লেখানোর হিড়িক পড়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও হেভিওয়েট বিজেপি ও জেডিএস নেতারা কংগ্রেস শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত নেতাও। তার পরেও আশঙ্কায় রয়েছে কংগ্রেস।
[আরও পড়ুন: জীবনকৃষ্ণের একাধিক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করল CBI! এবার নজরে বিধায়কের স্ত্রী ও শ্যালকের চাকরি]
এবার ভোটে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় নয়া কৌশল ঠিক করতে প্রতিদিনই আলোচনায় বসছেন এআইসিসি’র হেভিওয়েট নেতারা। কিন্তু এআইসিসি-র আশঙ্কা, ভোট কাটাকুটির খেলায় কুমারস্বামীর দলকে ব্যবহার করতে নানা কৌশল নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। জেডিএসকে সবরকমের সাহায্য করা হচ্ছে। কংগ্রেসের রাজ্যসভার এক সাংসদ একান্ত আলোচনায় জানান, কর্ণাটকের ভোটে ছোট ছোট দলের ভোটব্যাংক খুবই কম। তাই জেডিএসকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। বিশেষ করে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায়। সেখানে কুমারস্বামীর দল ভোটারদের মন জয় করতে পারলে তাতে ভোটবাক্সে লাভবান হবে বিজেপি। পালটা কংগ্রেসের কৌশল নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি দলের রাজ্যসভার ওই সাংসদ।
এদিকে টিকিট না পেয়ে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার। কংগ্রেসের চতুর্থ দফার তালিকায় তাঁকে হাবলি ধারওয়ার থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সংগঠন বি এল সন্তোষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, সন্তোষ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছিলেন। তাঁকে দল ছাড়তে বাধ্য করেছেন। রাজ্যের প্রভাবশালী এই লিঙ্গায়েত নেতা জানান, তিনি যাতে নির্বাচনে বিজেপির হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে থাকতে না পারেন তার জন্য সবরকমের চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন বিএল সন্তোষ।