সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা বা সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। ছাত্রদের আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এর মধ্যেই সংরক্ষণ ইস্যুতে কর্নাটকের (Karnataka) কংগ্রেস সরকার আঞ্চলিক ভাষার রাজনীতিকেই গুরুত্ব দিল। দক্ষিণের ওই রাজ্যে বেসরকারি চাকরিতে বিশেষ পদে কন্নড়ভাষীদের জন্য ১০০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিদ্দারামাইয়া সরকার। ইতিমধ্যে নতুন বিলে ছাড়পত্র দিয়েছে কর্ণাটকের মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় পেশ করা হতে পারে ওই বিল। বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে এই সংক্রা্ন্ত পোস্ট করেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। যদিও পরে ওই পোস্ট ডিলিট করা হয় ।
কর্নাটকের নতুন সংরক্ষণ নীতিতে বেসরকারি সংস্থার গ্রুপ 'সি' এবং গ্রুপ 'ডি' পদে কন্নড়ভাষীদের নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। অর্থাৎ স্থানীয়দের জন্য ১০০ শতাংশ সংরক্ষণ। সূত্রের খবর, নতুন বিলে বলা হয়েছে, যে কোনও সংস্থাকে ম্যানেজমেন্ট ক্যাটেগরিতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ 'স্থানীয় প্রার্থী' নিয়োগ করতে হবে। নন-ম্যানেজমেন্ট ক্যাটেগরিতে 'স্থানীয় প্রার্থী'-দের জন্য কমপক্ষে ৭০ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে।
[আরও পড়ুন: মাসে ১০ হাজার! ভোটমুখী মহারাষ্ট্রে পুরুষদের জন্য ‘লাডলা ভাই’ প্রকল্পের ঘোষণা শিণ্ডের]
'কর্ণাটক স্টেট এমপ্লয়মেন্ট অফ লোকাল ক্যান্ডিডেটস ইন দ্য ইন্ডাস্ট্রি, ফ্যাক্টরি অর আদার এসটাবলিশমেন্টস বিল'-এ আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি সংস্থায় কর্মপ্রার্থীকে কমপক্ষে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কন্নড় ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। অন্যথায় তাঁকে ভাষার পরীক্ষা দিতে হবে। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে যেমন ভাষার দক্ষতার পরীক্ষায় বসতে হয়, কর্ণাটকেও সেরকম ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে বিলে।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে ছিঁড়ল জোটের সুতো, আপকে ‘পথ দেখিয়ে’ বিধানসভায় একা লড়ার ঘোষণা কংগ্রেসের]
দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ভাষার রাজনীতি নতুন বিষয় নয়। তথাপি বেসরকারি ক্ষেত্রে স্থানীয়দের জন্য ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ সংরক্ষণ নজিরবিহীন ঘটনা। এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া দাবি করেছিলেন, তাঁর সরকার কন্নড়ভাষীদেরই সরকার। তাঁদের ভালোমন্দ দেখারও দায়িত্ব রয়েছে। উল্লেখ্য, এর জেরে বাঙালিদের মাথায় হাত পড়তে পারে। বর্তমানে প্রচুর বাঙালি প্রযুক্তনগরী বেঙ্গালুরু-সহ কর্ণাটকের বহু বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। আশার কথা হল, বিলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক যোগ্য স্থানীয় প্রার্থী না পাওয়া গেলে সংস্থাগুলি সংরক্ষণ শিথিলের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে পারে। উল্লেখ্য, সিদ্দারামাইয়ার সংরক্ষণ সংক্রান্ত পোস্ট নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠলে তা মুছে দেওয়া হয়েছে।
তবে সিদ্দারামাইয়ার পোস্ট সরানোর পর সংবাদসংস্থা এএনআইকে কর্নাটক সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ এস লাড়। তিনি বলেন, ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাব হয়েছে। অন্যান্য পদে ৭০ শতাংশ সরক্ষণ। যদি স্থানীয় কর্মী না পাওয়া যায়, তবেই ভিনরাজ্যের কর্মী নিয়োগ করা যাবে। সন্তোষ স্পষ্ট করেছেন, সরকারের প্রধান লক্ষ্যই হল যত বেশি সম্ভব স্থানীয়দের চাকরির ব্যবস্থা করা।