সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাম কাল্পনিক চরিত্র, রামায়ণ-মহাভারত কল্পকাহিনি, কবির লেখা মহাকাব্য। স্কুলে পড়ানোর সময় এমন মন্তব্য করেছিলেন। এই ‘অপরাধে’ বরখাস্ত হলেন কর্নাটকের (Karnataka) একজন শিক্ষিকা। স্থানীয় বিজেপি সাংসদ এবং একটি হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর লাগাতার বিক্ষোভের জেরে চাকরি খোয়াতে হল শিক্ষিকাকে। হিন্দুত্ববাদীদের আরও অভিযোগ, স্কুলে ছাত্র পড়ানোর সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামেও ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেছেন অভিযুক্ত। সব মিলিয়ে কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকে ফের ধর্মীয় বিতর্ক।
বিজেপির আমলে কর্নাটক উত্তাল হয়েছিল হিজাব বিতর্কে। মামলা গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট অবধি। এর পর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হারায় গেরুয়া দল। রাজ্যে কংগ্রেস ফিরলেও ধর্মীয় অশান্তি তথা বিতর্ক থেকে রেহাই মিলছে না। যদিও এবারের ঘটনার নেপথ্যে ম্যাঙ্গালুরু সিটি দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক ডি বেদব্যাস কামাথ। সেন্ট গেরোসা ইংলিশ এইচআর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সরব হওয়া হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর পিছনে তিনিই রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: আধার জটে অসমে ‘বঞ্চিত’ লক্ষ লক্ষ মানুষ, পাচ্ছেন না রেশনও, মেনে নিলেন হিমন্ত]
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, রামায়ণ-মহাভারতকে ‘কল্পকাহিনি’ বলার পাশাপাশি মোদির নামে কুৎসা করেছেন শিক্ষিকা। মোদিকে নিন্দা করতে ২০০২ সালের গোধরা দাঙ্গা, বিলকিস বানো মামলার প্রসঙ্গ টানেন। “শিশুদের মনে ঘৃণার অনুভূতি জাগিয়েছেন” তিনিই। শনিবার থেকে এই নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হলেও সোমবার বিক্ষোভে শামিল হন বিজেপি বিধায়ক। শিক্ষিকাকে বরখাস্তের দাবি তোলেন বেদব্যাস।
[আরও পড়ুন: মঙ্গলেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন অশোক চহ্বান! ফের ভাঙছে মহারাষ্ট্র কংগ্রেস?]
বিধায়কের বক্তব্য, “স্কুলে এমন শিক্ষককে রাখা হবে কেন?” অভিযোগ করেন, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রীদের সিস্টাররা টিপ পরতে বারণ করেন।”… ভগবান রামকে দুধ দিয়ে স্নান করানোকে অপচয় বলেন। যদি আপনার বিশ্বাসে কেউ আঘাত করে, নিশ্চিয়ই চুপ করে থাকবেন না।” বিধায়ক সরব হতেই ঘটনার তদন্তে নামে ডেপুটি ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন (DDPI)। বরখাস্ত করা হয় অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে। এক বিবৃতিতে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, “৬০ বছরের পুরনো স্কুলে এমন ঘটনা প্রথমবার ঘটেছে। পারস্পরিক বিশ্বাস গড়ে তোলাই লক্ষ্য।” এদিকে বিজেপি বিধায়কের রোষে শিক্ষিকার বরখাস্ত হওয়ার ঘটনায় ‘ধর্ম নিরেপক্ষ’ কংগ্রেস সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।