অর্ণব আইচ: ফের পুলিশের হেফাজতে ভুয়ো আমলা দেবাঞ্জন দেব (Debanjan Deb)। সোমবার ভুয়া টিকাকরণ কাণ্ডের (Fake Vaccination) মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব ও তার ৭ সঙ্গীকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। রাত আটটা নাগাদ বিচারক তাঁর রায় ঘোষণা করেন। দেবাঞ্জন দেবকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তাকে আগামী ৭ জুলাই ফের আদালতে তোলা হবে। বাকি ৭ জনকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিকে, জালিয়াতির ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দেবাঞ্জন দেব সরিয়ে কোথায় রেখেছে, তা নিয়েও চলছে তদন্ত। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, বাড়িওয়ালা তথা ব্যবসায়ী অশোক রায়ের মাধ্যমে দেবাঞ্জন ওই বিপুল টাকা সরিয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। অশোকবাবু জেল হেফাজতে গেলেও তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নেওয়া হচ্ছে তাঁর সম্পত্তির খতিয়ানও। এদিকে, দেবাঞ্জনের আয়ের উৎস ও সে টাকা তছরুপের সঙ্গে জড়িত কি না, তা জানতে তদন্ত সংক্রান্ত নথিপত্র পরীক্ষা করতে শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। চলতি সপ্তাহেই দিল্লির ইডি কর্তাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে ভারচুয়াল বৈঠক করবেন কলকাতার ইডি অফিসের আধিকারিকরা।়
[আরও পড়ুন: কেন রঙিন চশমায় চোখ ঢেকে রাখেন? জানালেন মদন মিত্র]
এদিন আলিপুর আদালতে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল আবেদনে জানান, ভুয়ো টিকা (Fake Vaccine) দেওয়ার পাশাপাশি ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা জালিয়াতির অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব। তার বিরুদ্ধে কলকাতা পুরসভার (KMC) অ্যাকাউন্ট জাল করার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি একটি ফরেনসিক রিপোর্ট এসেছে পুলিশের হাতে। তাতে প্রমাণ মিলেছে, যে ভায়ালগুলি থেকে টিকাকরণের নামে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল, সেই ভায়ালের লেবেলের উপর অন্য লেবেল সাঁটানো হয়েছিল। বিভিন্ন ব্যাপারে তাকে আরও জেরার প্রয়োজন। তাই আরও দু’দিনের পুলিশ হেফাজত চান সরকারি আইনজীবী।
দেবাঞ্জন দেবের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য তাঁর আবেদনে জানান, দেবাঞ্জন ১২ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন তাকে জেরা করা হয়েছে। পুলিশ খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করলেও দেবাঞ্জন যে খুনের চেষ্টা করেছে, এমন কোনও প্রমাণ পুলিশ পায়নি। দেবাঞ্জন মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই তার চিকিৎসার প্রয়োজন। দেবাঞ্জনের বাড়ি বা অফিসে কোনও তল্লাশি চালালে তার যেন ভিডিও ফুটেজ থাকে। দেবাঞ্জনের জামিনের আবেদনও করেন তাঁর আইনজীবী। ধৃত সঙ্গী সুশান্ত দাস, শান্তনু মান্না, রবিন শিকদার, খুড়তুতো দাদা কাঞ্চন দেব, কম্পাউন্ডার শরৎ পাত্র, নিরাপত্তারক্ষী অরবিন্দ বৈদ্য বা বাড়িওয়ালা অশোক রায়ের আইনজীবীরাও তাঁদের জামিনের আবেদন জানান। আদালতে প্রত্যেকের হয়ে আইনজীবী দাবি করেন, ধৃতরা কেউ জানতেন না যে দেবাঞ্জন ভুয়ো IAS। ধৃতদের জেরা করা হয়েছে। দেবাঞ্জনের কীর্তির সঙ্গে যে তাঁরা সরাসরি জড়িত, এমন কোনও প্রমাণও মেলেনি। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেই বিচারক দেবাঞ্জনকে আরও দু’দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকি ৭ জনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। ফলে পুলিশ দেবাঞ্জনকে আরও দু’দিন জেরার সুযোগ পাচ্ছে ‘সিট’।