সুমন করাতি, হুগলি: ঘটকালির আড়ালে পাচার চক্র! রাজ্যে এসে হুগলির বাঁশবেড়িয়া থেকে অভিযুক্ত এক মহিলা এবং তাঁর সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল কাশ্মীর পুলিশ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। কীভাবে চলত পাচারের কারবার?
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত মহিলার নাম জইতুন বিবি। মগরা থানার বাঁশবেড়িয়া ইসলামপাড়ার বাসিন্দা তিনি। অভিযোগ, গত বছর দুয়েক ধরে ঘটকালির আড়ালে নারী পাচার চক্র চালাতেন জইতুন। মূলত দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করার নামে তাদের পাচার করে দিতেন। বিনিময়ে মেয়ের পরিবারকে টাকাও দিতেন। এভাবেই অভিযুক্ত ও তাঁর সঙ্গী জম্মু ও কাশ্মীর থেকেও অনেক মেয়েদের পাচার করেছিলেন বলে অভিযোগ।
এই বিষয় পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের বড়গাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। বড়গামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে। তার পরই নারী পাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ঘটনার তদন্তে নামে কাশ্মীর পুলিশ। পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাচার হয়ে যাওয়া মহিলার গোপন জবানবন্দিতে জইতুনের নাম জানতে পারে কাশ্মীর পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘সৌমিত্র-সুজাতার দাম্পত্য কলহে আগ্রহ নেই’, বিষ্ণুপুরের বাম প্রার্থীর অস্ত্র ‘সেটিং’ তত্ত্ব]
এর পরেই বুধবার জম্মু-কাশ্মীর থেকে দুই মহিলা-সহ মোট ছজন পুলিশকর্মী মগরায় আসেন। মগরা পুলিশের সাহায্যে ইসলামপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জইতুন এবং তাঁর সঙ্গী মহম্মদ ফিরোজকে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের চুঁচুড়া আদালতে পেশ করে ১০ দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে কাশ্মীরে নিয়ে যায় পুলিশ। এনিয়ে অভিযুক্ত জইতুনের স্বামী জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি বিহারে। দুদিন আগে তিনি সেখান থেকে এসেছেন। কী হয়েছে জানেন না।
অন্য দিকে জইতুনের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী মহম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘‘জইতুন ঘটকালি করত। এলাকার অনেক মেয়েকে কাশ্মীরে বিয়ে দিয়েছে। কাশ্মীর থেকে ছেলেরা আসত। পাত্রীর মা-বাবাকে টাকা দিয়ে বিয়ে করে নিয়ে যেত। অনেক মেয়েকে বিয়ে দিয়ে পাঠিয়েছে জইতুন। এত দিন এই ধরনের কোনও অভিযোগ শুনিনি। তবে গরিব পরিবারের মেয়েদের এ ভাবে বিক্রি করে দিত ভেবে খারাপ লাগছে।’’