সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেটা ছিল ১৯৮৯ সাল। ১৪ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরে হত্যা করা হয়েছিল এক হিন্দু ব্রাহ্মণকে। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জেকেএলএফ-এর প্রথম টার্গেট ছিলেন পন্ডিত টিকালাল তাপলু। ওঁর হত্যা কাশ্মীরে হিন্দুদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, তার আঁচ ছড়িয়েছিল গোটা দেশজুড়ে। তারপর ‘ভূস্বর্গে’ সংখ্যালঘুদের নারকীয় হত্যালীলা ও রাতারাতি কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পলায়ন গোটাটাই ইতিহাস। প্রায় তিন দশক পর ফের উপত্যকায় ফিরছে সেই ভয়াবহ দিনগুলি। আবারও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা করছে জঙ্গিরা। ফলে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন অনেকেই।
[আরও পড়ুন: প্রধান শিষ্য রণজিৎ সিং হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিম]
সম্প্রতি শ্রীনগরের সঙ্গম ঈদগায় দু’জন স্কুল শিক্ষককে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। তার আগে মঙ্গলবার , শ্রীনগরের ইকবাল পার্কের কাছে হামলা চালায় জেহাদিরা। তাদের ছোড়া গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান ওষুধের দোকানের মালিক মাখনলাল বিন্দ্র। নিহতরা কাশ্মীরি পণ্ডিত। এই ঘটনার পরই চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কাশ্মীরের (Kashmir) হিন্দু ও শিখরা। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার বদগাওঁ জেলার শেখপুরা থেকে পলায়ন করেছে বেশ কয়েকটি হিন্দু পণ্ডিত পরিবার। ২০০৩ সালে উপত্যকা থেকে পলায়ন করা পণ্ডিতদের পুনর্বাসনের জন্য ওই বসতি তৈরি করেছিল কেন্দ্র সরকার। সরকারি অফিস থেকেও ছুটি নিয়ে কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেকে হিন্দু বলে খবর।
এদিকে, পণ্ডিতদের কাশ্মীর ছেড়ে না যাওয়ার আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলি। এহেন হত্যালীলার তীব্র নিন্দা করে করেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর নেতা ওমর আবদুল্লা। টুইটারে লিখেছেন, “শ্রীনগর থেকে আবার ভয়ঙ্কর খবর এল। আবারও নিশানা করে খুন। এবার ইদগাহতে সরকারি স্কুলের দুই শিক্ষককে খুন। এই ধরনের অমানবিক কাজকে ঘৃণা বা সমালোচনা যথেষ্ট নয়। মৃতদের আত্মার শান্তিকামনা করছি।”
উল্লেখ্য, আশির দশকের শেষে কাশ্মীরে চরম পর্যায়ে ওঠে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ৷ পৈশাচিক রূপ ধরে সাম্প্রদায়িকতা৷ পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা নারকীয় হত্যালীলা চালায় কাশ্মীরি পণ্ডিত ও শিখ সম্প্রদায়ের লোকেদের উপর৷ পুরুষদের জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়৷বাধা দিলে করা হয় নির্বিচারে হত্যা৷ প্রাণ ও ধর্ম বাঁচাতে প্রায় ১ লক্ষ্ কাশ্মীরি পণ্ডিত নিজেদের ঘর ছেড়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন দিল্লি-সহ অন্যান্য জায়গায়৷ যদিও কেন্দ্র সরকার বহুবার তাঁদের উপত্যকায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের ধমকানিতে তা বাস্তবে পরিণত হয়নি৷