ধীমান রায়, কাটোয়া: করোনা পরিস্থিতিতে ধাক্কা খেয়েছিল কাঠের ব্যবসা কিন্তু অনলাইন বিপণি কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের কাষ্ঠশিল্পীদের কপাল খুলে দিয়েছে। তাঁদের হাতে তৈরি প্রতিমা পৌঁছে যাচ্ছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সেখানকার এক দারুশিল্পী অক্ষয় ভাস্করের হাতে তৈরি কাঠের সিংহবাহিনী মূর্তি এবার পুজো (Durga Puja 2021) পাবে সুদূর কানাডায় (Canada)।
কানাডার এক প্রবাসী বাঙালি মহিলা কাটোয়ার শিল্পীকে বরাত দিয়েছেন। শিল্পী জানাচ্ছেন, মূর্তি ও মডেল তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। আর কিছুদিনের মধ্যেই ক্যুরিয়রের মাধ্যমে সিংহবাহিনী মূর্তি ও কয়েকটি মডেল পাঠিয়ে দেওয়া হবে কানাডায়। এমনটাই জানিয়েছেন শিল্পী অক্ষয় ভাস্কর।
[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: সপ্তমীর হোমের আগুন নেভে দশমীতে! ডায়মন্ড হারবারের মণ্ডলবাড়ির পুজোর ইতিহাস জানেন?]
অগ্রদ্বীপের কাষ্ঠশিল্পের জগৎজোড়া খ্যাতি রয়েছে। এখানকার শিল্পীদের হাতে তৈরি কাঠের ওপর সূক্ষ কাজ প্রশংসা পেয়েছে দেশ-বিদেশে। কিন্তু করোনা মহামারীর প্রকোপে এই শিল্পেও ভাঁটা চলছিল। সেই অসময় কাটিয়ে এখন অনলাইন বাজার ধরছেন অগ্রদ্বীপের দারুশিল্পীরা। শিল্পী অক্ষয় ভাস্করের পূর্বপুরুষরাও কাষ্ঠশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, “প্রায় দু’বছর মেলা বন্ধ। সেভাবে আর কাজের বরাত আসছিল না। তাই আমরা অনলাইনের মাধ্যমেই বিক্রিবাটা শুরু করেছি। শারদোৎসবে বিভিন্ন রাজ্য থেকে অনলাইনে অর্ডার পেয়েছি। আবার বিদেশ থেকেও সাড়া পেয়েছি।” অক্ষয় আরও জানান, কানাডার এক মহিলা আড়াই ফুটের সিংহবাহিনী মূর্তির বরাত দিয়েছেন। তার সঙ্গে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা ও রাধাকৃষ্ণের মূর্তি। পাশাপাশি আরও কয়েকটি মডেল রয়েছে। সবমিলিয়ে কানাডা থেকে ৩৫ হাজার টাকার বরাত পেয়েছেন অক্ষয়বাবু।
[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: সিপাই বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত রায়গঞ্জের কুণ্ডুবাড়ির পুজোর ঐতিহ্য, জানুন সেই কাহিনি]
কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপের কাষ্ঠশিল্পীরা কাঠের পুতুল, নানান পাখি ইত্যাদি বেশি তৈরি করেন। শৌখিন সামগ্রীর চাহিদা বাড়ার ফলে এখন সূক্ষ কারুকাজেরও নানান মডেল তৈরি করেন তাঁরা। তাদের হাতে তৈরি কাঠের পুতুল পাড়ি দিয়েছে ভিনরাজ্যের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও। এখানকার শিল্পীদের তৈরি কাঠের রাশিয়ান ডল স্পেনের মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে।
জানা যায়, আফ্রিকান ডলের আদলেই কাঠের তৈরি মডেল রাজ্যের বিশ্ববাংলার বিপনন কেন্দ্র গুলির মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। তবে প্রতিবছর শারদোৎসবের কাজের দিকেই মূলত তাকিয়ে থাকেন অগ্রদ্বীপের দারুশিল্পীরা।