সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরে কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের শাসনভার সাময়িকভাবে হাতে নিতে পারেন কিম জং উনের সহোদর বোন কিম ইও জং। উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি, সরকার ও সেনাবাহিনীতে কিম ইও-র বিরাট প্রভাব রয়েছে। তিনি দাদা কিমের প্রতি অনুগত এবং বিশ্বস্ত। শোনা যায়, কিম কোনওদিন কোনও পুরুষ আত্মীয় বা পরিবারের সদস্যকে বিশ্বাস করেননি। তাঁর একাধিক নারীসঙ্গী বা স্ত্রীকেও বিশ্বাস করেননি কখনও। কিন্তু বোনের প্রতি অগাধ আস্থা তাঁর। এর আগে কিমের পাশে জরুরি বৈঠকগুলিতে বোন ইও-কে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। ফলে কিমের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক বলে যখন রটেছে এবং সেই রটনা যখন সরকারিভাবে উত্তর কোরিয়া খণ্ডন করেনি তখন পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার গুপ্তচর সংস্থাগুলির পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিম অসুস্থ বা মৃত হলে সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম পছন্দ কিমের বোন কিম ইও জং। কারণ তিনি বরাবরই সর্বাধিনায়ক কিমের পছন্দ।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবশালী সেজং ইনস্টিটিউটের কৌশলগত বিশেষজ্ঞ চেওং সেওং চাং বলেছেন, নিজের বুদ্ধিমত্তা, ব্যক্তিত্ব এবং পরিচালন ক্ষমতার কারণেই ইও-র উপর আস্থা রেখেছেন কিম। কিমের যুদ্ধনীতি, আমেরিকার সঙ্গে দর কষাকষির জায়গাটা বোন ইও সমর্থন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ের সঙ্গেও নরমে গরমে কথা বলেন ইও। দাদার সব সিদ্ধান্তে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বোনের। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র প্রাক্তন ডেপুটি চিফ ও মার্কিন মুলুকের হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ব্রুস ক্লিনগার বলেছেন, গত তিন দশক ধরে উত্তর কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত ছিলাম। এমনও হতে পারে, কিমের কিছুই হয়নি। খবরে ভেসে থাকার জন্য পরিকল্পনা করে এসব রটাচ্ছেন। কারণ অতীতে কিম ও তাঁর বাবাকে নিয়ে গত ৫০ বছরে এমন বহু খবর দাবানলের মতো রটেছিল যা পরে মিথ্যে প্রমাণিত হয়। আবার এমনও হতে পারে, কিম সত্যিই খুব অসুস্থ। সেরে উঠতে সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে এখন বোন ইও ছাড়া আর কারও উপরে কিম আস্থা রাখতে পারবেন না। হয়তো মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান, হার্টের সমস্যা, স্থূলতার কারণেই কিম আজ গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু তাঁর করোনা সংক্রমণ হয়েছে এমন কোনও তথ্য এখনও বিশ্বাসযোগ্য নয়। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিম জংয়ের সুস্বাস্থ্য কামনা করলেন।
[আরও পড়ুন: আশঙ্কাজনক অবস্থা কিম জং উনের! মার্কিন মিডিয়ার খবরে ব্যাপক শোরগোল]
হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প বলেছেন, “আমি কিম জংয়ের দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আমাদের তার সঙ্গে বেশ ভাল সম্পর্ক রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে যেমন তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে যে সমস্ত খবর প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলি ঠিক হলে, তা খুবই উদ্বেগজনক ব্যাপার।” তবে কিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁর কাছে কোনও তথ্য থাকার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতেই তিনি কিমের সুস্বাস্থ্য কামনা করছেন বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “খবর ঠিক না ভুল, তা আমি জানি না।” কেসিএনএ এবং ইওনহাপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ১২ এপ্রিল হৃদযন্ত্রে জটিল অস্ত্রোপচার হয় কিমের। সেই থেকে সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি কিম। এই মুহূর্তে উত্তর পিয়ংইয়ংয়ের হিয়াংসান কাউন্টির মাউন্ট কুমগাং রিসর্টে কিম চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কঠোর পর্যবেক্ষণে রয়েছেন কিম। রিসর্টে কিমের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর ৩০ জন ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ও পরিবারের সদস্যরা।
The post যায় যায় অবস্থা কিমের! উত্তর কোরিয়ার মসনদে বসতে পারেন বোন কিম ইও appeared first on Sangbad Pratidin.