সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন পৃথক রাজ্যের দাবি জানিয়ে এসেছে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (KLO)। এবার সেই দাবি থেকে সরে দাঁড়াল এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি। এবার আর রাজ্য নয়, সরাসরি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে ভিডিও বার্তা দিল তারা। দাবি না মানলে সরাসরি সশস্ত্র আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল কেএলও। স্বাভাবিকভাবেই উত্তরবঙ্গের (North Bengal) এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের হঠাৎ সক্রিয়তা চিন্তায় রাখছে রাজ্যের গোয়েন্দাদের।
গত দু’মাসে চারটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাও দায়ের হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক পেজে নয়া ভিডিও পোস্ট করে কেএলও। তাতে অবশ্য এবার জীবন সিংহকে দেখা যায়নি। বরং কোচ পাভেল নামে এক যুবক কেএলও-র বার্তা পাঠ করে। সে নিজেকে কেএলও-র বিদেশ সচিব হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কী বলেছে ভিডিও বার্তায়?
[আরও পড়ুন: ৩ হাজারে মিলছে জল, ভাতের দাম সাড়ে ৭ হাজার টাকা, চরম দুর্ভোগ কাবুল বিমানবন্দরে]
জীবন সিংহের লেখা বার্তা পাভেল পাঠ করছে বলে দাবি করে জানায়, উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলা, নেপালের কিছু অংশ, বিহারের কিষানগঞ্জ সংলগ্ন কিছু এলাকা, অসম ও মেঘালয়ের বেশ কিছু এলাকা ও বাংলাদেশের রংপুর এলাকা নিয়ে স্বাধীন কামতাপুর রাষ্ট্র গঠন করতে চায় কেএলও। ইতিহাসে যে কোচবিহার রাজ্যের উল্লেখ ছিল, তার যা সীমা তার পরিসর মেনেই স্বাধীন কামতাপুর রাষ্ট্র তৈরি করা হবে। এই বিবৃতিতে তারা ভারতকে তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে দাবি করেছে। দাবি না মানা হলে সশস্ত্র সংগ্রামের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই বার্তা নিয়ে জল্পনা বেড়েছে।
[আরও পড়ুন: Kabul Blast-এর নেপথ্যে Taliban-ISIS আঁতাত! পাকিস্তানকেও ঠুকলেন আফগান ‘কার্যকরী প্রেসিডেন্ট’]
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবিতে সরব হয়েছেন একাধিক বিজেপি নেতা। তাদের এই দাবির তুমুল সমালোচনা করেছে রাজ্য সরকার। এর মাঝেই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএলও-র দাবিতে জল্পনা বেড়েছে। এ নিয়ে বিজেপিকে (BJP) বিঁধেছেন কোচবিহারের তৃণমূল সভাপতি গিরিন্দ্রনাথ বর্মন। তাঁর কথায়, “কিছুদিন আগেই বিজেপিও একই দাবি জানিয়েছিল। মনে হচ্ছে, কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই পৃথক রাষ্ট্রের দাবি জানিয়েছে কেএলও। তবে রাজ্যস্তরে নেতৃত্ব যা বলবে সেই অনুযায়ী কর্মসূচি নেব আমরা।” যদিও তৃণমূলের (TMC) এহেন দাবি খারিজ করে দিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে তুফানগঞ্জের বিধায়ক তথা কোচবিহারের বিজেপি সভাপতি মালতী রাভা রায় বলেন, “বিজেপি জাতীয়তাবাদী দল। এর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির কোনও যোগ নেই। সংগঠনটি নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুযায়ী দাবি জানিয়েছে।”
কারা এই KLO? বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটির জন্ম ১৯৯৫ সালে। তোমির দাস ওরফে জীবন সিংহ আলিপুরদুয়ারের উত্তর হলদিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর হাত ধরেই কেএলও-র জন্ম। প্রথম থেকেই তারা উত্তর পূর্ব ভারতের বোরো ও বোরো জঙ্গি গোষ্ঠী এনডিএফবি-র খুব ঘনিষ্ঠ। কেএলও ULFA গোষ্ঠীরও খুব ঘনিষ্ঠ বলে দাবি গোয়েন্দাদের।