অভিরূপ দাস: রেকর্ড করল কলকাতা পুরসভা (KMC)! যা আগে হয়নি কোনওদিন। স্বাধীনতার পর এই প্রথম সবচেয়ে বেশি টাকা বরাদ্দ হল শহরের পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে। কলকাতা পুরসভার বাজেট বিবৃতি শেষে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, শহরের পানীয় জলের ঘাটতি মেটাতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা জলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
জলের (Water) সমস্যা মেটাতে পুরসভার পাখির চোখ এখন শহরের সংযোজিত এলাকা। বিশেষ করে যাদবপুর, টালিগঞ্জ, গড়িয়া, পাটুলি, মুকুন্দপুর। ইতিমধ্যেই ধাপার ‘জয়হিন্দ প্রকল্পে’ অতিরিক্ত আরও কুড়ি মিলিয়ন গ্যালন পরিশোধিত জল তৈরির ব্যবস্থা হচ্ছে। দক্ষিণ শহরতলির গড়িয়াতেও নতুন করে ১০ মিলিয়ন গ্যালন পরিশোধিত পানীয় জল তৈরির প্রকল্প শুরু হয়েছে। এর ফলে সংযোজিত এলাকার পানীয় জলের সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার অথরিটি’র হিসেব অনুযায়ী, শহর কলকাতায় দৈনিক মাথাপিছু ১৫০ লিটার জলের প্রয়োজন। পুরসভার জল বিভাগের আধিকারিক জানিয়েছেন, গ্রীষ্মে সেই প্রয়োজন দ্বিগুণ হয়ে যায়। পানীয় জল তো বটেই বাসন-মাজা, কাপড় কাচার জন্যেও অতিরিক্ত জল খরচ হয় এই সময়ে। জল বিভাগের আধিকারিক জানিয়েছেন, গ্রীষ্মে অনেকেই একাধিকবার স্নান করেন। যে সমস্ত কাজে (বাসন মাজা, কাপড় কাচা) অতিরিক্ত জল খরচ হয় সেগুলো গ্রীষ্মে মাত্রিতিরিক্ত। স্বাভাবিকভাবেই শহর কলকাতার কিছু এলাকায় জলের ঘাটতি দেখা যায়। এদিন অধিবেশন শেষে মেয়র বার্তা দিয়েছেন সমস্ত কাউন্সিলরকে।
[আরও পড়ুন: সিনেজগতে ৫৫ বসন্ত পার অমিতাভের, ‘সুহানা সফর’ ফিরে দেখলেন AI-এর বিস্ময় চোখে]
ফিরহাদ জানিয়েছেন, গ্রীষ্ম আসছে। যদি নির্দিষ্ট করে কোনও ওয়ার্ডে জলের সমস্যা দেখতে পান তাহলে ব্যক্তিগত ভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। টেবিল বাজিয়ে মেয়রের এ প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধী কাউন্সিলররাও। নতুন অর্থবর্ষে জলের সমস্যা মেটাতে কি কি কাজ হচ্ছে পুরসভায়? মেয়র জানিয়েছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে জলের সমস্যা মেটাতে নতুন বুস্টার পাম্পিং স্টেশন হচ্ছে শহরে। পাশাপাশি শহরের একাধিক জায়গায় পুরনো জীর্ণ পাইপলাইন বদলে নতুন লাইন বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন পুরসভা।
[আরও পড়ুন: যুবরাজের বাড়িতে চুরি, খোয়া গেল প্রচুর নগদ এবং গয়না, সন্দেহের তির কার দিকে?]
পুর বাজেটের জল পরিকল্পনা বলছে, ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার কমাতে চাইছে পুরসভা। যে সমস্ত এলাকায় বড় ব্যাসের নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল নিষ্কাশন করা হয়, তা বন্ধ করার জন্য ভূ-পৃষ্ঠস্থ জলকে পরিশোধন করে ব্যবহার করতে কলকাতার ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ পল্লিতে ৩.২ মিলিয়ন গ্যালন কার্যক্ষমতা সম্পন্ন এসইউজিআর ও ইএসআর-সহ বুস্টার পাম্পিং স্টেশন স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের অজয় নগরেও পাম্পিং স্টেশন সহ ১.৮ মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন জলাধার নির্মাণের কাজ চলছে। পাটুলি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের কমান্ড জোনে পরিশোধিত জল সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষে বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের ভেতরে অতিরিক্ত জলাধার নির্মাণের কাজ চলছে।