অভিরূপ দাস: দুদিন আগেও কাপড় মেলতেন বাসিন্দারা। এখন ছাদের গেটে তালা। চলছে ক্যাফে-রেস্তরাঁ!
শহরের একাধিক বহুতলে বিক্রি হচ্ছে ছাদ। সেখানে রমরম করে চলছে রেস্তরাঁ ব্যবসা। কোথাও ছাদের চারপাশে জাল লাগিয়ে চলছে নানা স্পোর্টস। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের তিনি জানান, ছাদ ‘কমন এরিয়া’। আবাসনের সকল বাসিন্দা তা ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যক্তিগতভাবে ছাদ কিনে ব্যবসা করা যাবে না।
ছাদ বিক্রি হলে বিঘ্নিত হচ্ছে নিরাপত্তা। আচমকা আবাসনে আগুন লাগলে ছাদ ব্যবহার করেই ঢুকতে হয় দমকল কর্মীদের। বিপর্যয়ে আবাসনের বাসিন্দাদের উদ্ধার করতেও ভরসা ছাদ। মেয়র জানান, ছাদের চারপাশ ঘিরে গেটে তালা লাগালে বরদাস্ত করা হবে না। শনিবার মেয়রের দ্বারস্থ হন মধ্য কলকাতার বাসিন্দা বিপ্লব ভট্টাচার্য। বিপ্লববাবুর অভিযোগ, দুহাজার সালে একটি বাড়ির দুতলা কিনেছি। পরে সেই বাড়ির একতলা আর তিনতলা কেনেন অন্য এক ভদ্রলোক। কিনে নেন ছাদটিও। ছাদ বিক্রি! বিস্মিত মেয়রের প্রশ্ন, ‘‘ছাদ কী করে বিক্রি হল?’’ বিল্ডিং বিভাগের ডিজিকে তিনি নির্দেশ দেন ওই বিল্ডিং যেন কোনওভাবেই অনুমোদন না পায়।
[আরও পড়ুন: মনুয়া কাণ্ডের ছায়া অশোকনগরে, প্রেমিকের সঙ্গে ফন্দি এঁটে স্বামীকে ‘খুন’ যুবতীর!]
মেয়রের কথায়, ছাদ কমন ল্যান্ড। সকলের ব্যবহারের জন্য। ছাদ আলাদা করে কেউ কিনতে পারে না। বিল্ডিং যেন অনুমোদন না পায়। উল্লেখ্য, শহরের একাধিক জায়গায় ছাদের ওপর চলছে ব্যবসা। কোথাও হুকা বার কোথাও বা রমরমিয়ে চলছে ক্যাফে। চারপাশ দিয়ে ছাদ ঘিরে ব্যবসা করছেন রেস্তরাঁ মালিকরা। অনেক সময় প্রোমোটাররাই সমস্ত ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর শুধু ছাদটুকু নিজের নামে রেজিস্ট্রি করতে আসছেন।
বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা জানান, এটা হবে না। প্রোমোটার চাইলে ছাদ বিক্রি করতে পারবেন না। শুধুমাত্র বাসিন্দাদের এনওসি দেখিয়ে কাজ হবে না। বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ছাদ বিক্রি করতে গেলে আমরা সম্পূর্ণ বিল্ডিং ক্ষতিয়ে দেখব। দেখা হবে সমস্ত নিয়ম মেনে বিল্ডিং তৈরি হয়েছে কি না, যতটা ছাড় দেওয়া হয়েছে তাতে আদৌ আরও একটা তলা বাড়ানো যাবে কি না। কারণ, ছাদ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে উপরে আরও একটি তলা বাড়িয়ে ছাদ তৈরি করতে হবে। এরপর বিল্ডিং প্ল্যানে আবাসনের প্রতিটি বাসিন্দার সই চাই। তবে বিক্রি করা যাবে ছাদ। নয়তো ছাদের উপর বেআইনি রেস্তরাঁ ভেঙে দেবে পুরসভা। এদিন বিপ্লববাবুকে মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘আপনি থানায় গিয়ে এফআইআর করুন। আমি বাকি বিষয়টা দেখছি।’’