অভিরূপ দাস: বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। কিন্তু ভিতরে ইঁদুরের দল কুরে কুরে খেয়ে নিয়েছে শিকড়। সামান্য হাওয়াতেই তাই শিকড় আলগা হয়ে পড়ে যাচ্ছে সেসব গাছ। শহর কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটছে একের পর এক। ঝড় ছাড়াও দমকা হাওয়া-সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তার উপর ভেঙে পড়ছে বহু গাছ। সবই ইঁদুরের দাঁতের কারসাজি! তাই এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে রাস্তার ধারে এবার নিমগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
শুক্রবার পুরসভার (KMC) অধিবেশনে অকারণে গাছ পড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। তাঁর প্রশ্ন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কলকাতা শহরে অল্প ঝড়ে বড় বড় গাছ পড়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে পুরসভার কী চিন্তা? তাতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, ইঁদুর নিমের শিকড় খেতে পারে না, তিতকুটে স্বাদ বলে। অল্প ঝড়ে গাছ পড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে দুটি বিষয়কে সামনে এনেছেন ফিরহাদ। তাঁর কথায়, ‘‘তীব্র গরমের কারণে মহানগরের মাটির তলার জল কমে যাচ্ছে। ফলে শিকড়ের সঙ্গে মাটির বন্ধন আলগা হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, শহরের গাছগুলোর শেকড়ে মাটির পরিমাণ কম হওয়ায় তারা পড়ে যাচ্ছে একটুতেই।’’
[আরও পড়ুন: অধীরের ‘গোপন’ ইস্তফা জানিয়ে দিল হাইকমান্ড]
কলকাতায় (Kolkata) বহুদিন ধরে রাস্তার দুধারে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া জাতীয় গাছ লাগানো হয়েছে। এমন গাছের শিকড় দুর্বল। অল্প ঝড়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা ঠেকাতে উইপিং দেবদারু বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। উইপিং দেবদারুর উচ্চতা ১০ থেকে ১২ ফুট। এই গাছের শিকড় একদম সোজাসুজি মাটির তলায় প্রবেশ করে। আঁকড়ে ধরে থাকে। ফিরহাদের কথায়, ঝড়ে সহজে এই গাছ পড়বে না। ১০/১২ ফুটের গাছ রাস্তার দুধারে থাকলে কার্বন ডাই অক্সাইড (Carbon Di-Oxide) সহজেই শুষে নিতে পারবে। ফলে শহরের বায়ু অনেক বেশি পরিষ্কার থাকবে। বেশ কিছু বছর আগে রাস্তার ধারের গাছ ঘিরে দিয়েছিল পুরসভা। পরবর্তীকালে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) আদেশে তা ভাঙতে হয়।
[আরও পড়ুন: বেলঘরিয়ায় শুটআউটের পর টিটাগড়ের ব্যবসায়ীকে লাগাতার হুমকি, সুরক্ষা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি]
এদিন হাই কোর্টকে সম্মান জানিয়েই মেয়র বলেছেন, ''পরিবেশপ্রেমী বাস্তববুদ্ধিহীন কিছু লোক কোর্টে গিয়েছিলেন। কোর্টকে বিভ্রান্ত করে তারা বেদি ভাঙার অর্ডার নিয়ে এসেছিলেন। গাছের চারপাশে ঘেরা বেদি থাকলে আমফানের মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সময় কয়েক হাজার গাছ বাঁচাতে পারতাম।''