shono
Advertisement

শুচিবায়ুগ্রস্তরা নষ্ট করছে কোটি লিটার জল! ‘কর বসান’, মেয়রকে আবদার শহরবাসীর

চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত জল ঘাঁটাঘাঁটি আদতে এক অসুখ।
Posted: 01:45 PM Sep 04, 2023Updated: 02:36 PM Sep 04, 2023

অভিরূপ দাস: নিজেকে পরিস্কার রাখার বাতিকে শহরের জলের অপচয়। কেউ মিনিটে মিনিটে হাত ধুচ্ছেন। প্রয়োজন নেই, তাও কমোডে জল ঢালছেন ঘন ঘন। একেকবার কোমোড ফ্লাশ করলে বেরিয়ে যাচ্ছে দশ লিটার জল। জল খরচের ধাক্কায় মাথায় হাত ফ্ল‌্যাটের অন‌্যান‌্য বাসিন্দাদের। জলের ট‌্যাঙ্ক খালি হয়ে যাচ্ছে যে কয়েক মিনিটে। অতিরিক্ত জল ঢালায় কোনও আবাসনের নর্দমা জ‌্যাম হয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা। তা নিয়ে অভিযোগ এসছে খোদ কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে।

Advertisement

চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত জল ঘাঁটাঘাঁটি আদতে এক অসুখ। ন‌্যাশনাল মেডিক‌্যাল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সৃজিত ঘোষ জানিয়েছেন, চিকিৎসা পরিভাষায় এ অসুখের নাম ‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার’। এ অসুখে যাঁরা আক্রান্ত তাঁরা একই কাজ বারে-বারে করে চলেছেন। কেউ দরজা বন্ধ করার পরেও বারবার দেখতে থাকেন বন্ধ হয়েছে কিনা। কেউ নোংরা ভেবে হাত ধুতে থাকে ঘনঘন।

[আরও পড়ুন: যাদবপুরের রেজিস্ট্রারকে হুমকি চিঠিতে অভিযুক্ত, শ্লীলতাহানি মামলায় গ্রেপ্তার কোচবিহারের অধ্যাপক]

পুরসভা সূত্রের খবর এ অসুখের জন্যই নষ্ট হচ্ছে কলকাতার প্রায় ১ কোটি লিটার জল। শহরে প্রতিদিন দেড়শো কোটি লিটারের বেশি জল পরিশোধন করে সরবরাহ হলেও তাই কম পড়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমনই শুচিবায়ুদের ঠেকাতে জলের কর বসানোর দাবি তুলছেন তিলোত্তমার বাসিন্দারাই।

সম্প্রতি উত্তর কলকাতার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণমল্লিক রোড থেকে এমনই দাবি আসে মেয়রের কাছে। মেয়রের কাছে অভিযোগকারীর বক্তব্য, গলিতে জল জমে। বরো ১- এর নিকাশি বিভাগের কাউকে দ্রুত পাঠান। কেন জমেছে জল? শুনতে গিয়েই চোখ কপালে। অভিযোগকারী জানিয়েছেন, শ্বেতা সেন নামে এক মহিলা থাকেন তাঁর ওপরের ফ্ল্যাটে। অকারণে বাথরুমে বালতি বালতি জল ঢেলেই চলেছেন। যার প্রভাব পড়েছে ফ্ল‌্যাটের নিকাশি ব‌্যবস্থাতেও। শহরে এখন ডেঙ্গুর মরশুম। তার মধ্যে ওই মহিলার এমন অদ্ভুত আচড়ণে ঘুম উড়েছে পড়শিদের। মেয়রের কাছে অভিযোগকারীর দাবি, ওই মহিলা যেভাবে জল ফেলছে তাতে নিকাশি নালা জ‌্যাম হয়ে যাচ্ছে রোজ রোজ।

[আরও পড়ুন: রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্যকেই প্রেসিডেন্সির দায়িত্ব, ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন VC নিয়োগ রাজ্যপালের]

এহেন শুচিবাইদের নিয়ে কী সমাধানের কথা ভাবছে পুরসভা? মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, “কিছু মানুষের অভ্যেস জল জমিয়ে রাখা। ঘনঘন জল ফেলা। এটা একটা অসুখ। জল শোধন করতে পুরসভার খরচ হয়। এরা পুরসভার টাকা নষ্ট করছে।” মেয়রের আফশোস, “ওই টাকায় অন‌্য আরও উন্নয়নমূলক কাজ হতে পারতে। সুন্দর ফুটপাথ হতে পারত। টাকা তো লিমিটেড। যেহেতু বিনা পয়সায় পাচ্ছে নষ্ট করছে।” শুচিবায়ুগ্রস্ত ওই ভদ্রমহিলাকে এক নম্বর বরো থেকে এসে সতর্ক করা হয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কিছুদিন ঠিক ছিল। আবার শুরু করেছেন ঘনঘন জল ফেলা। পড়শিদের দাবি, কলের ট‌্যাক্স বসিয়ে দিন বাড়িতে। মেয়রের কথায়, “তা সম্ভব নয়। আমরা শুধু বলতেই পারি। শুচিবায়ুদের উপর কোনও আইনি ব‌্যবস্থা নিতে পারি না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement