shono
Advertisement

কোভিড কেড়ে নিয়েছে ছোট বোনকে, শান্তির খোঁজে ‘যশ’বিধ্বস্তদের পাশে কর্পোরেট কর্তা

"সবার মধ্যে বোনকে খুঁজছি", জানালেন দক্ষিণ কলকাতার এই বাসিন্দা।
Posted: 09:43 PM Jun 05, 2021Updated: 10:31 PM Jun 05, 2021

দীপঙ্কর মণ্ডল: কোভিডের (COVID-19) অভিশাপে বলি হয়েছেন ছোট বোন। খাঁ খাঁ করছে কর্পোরেট কর্তার হৃদয়। কলকাতার এই যুবককে দেখা যাচ্ছে যশ বা ইয়াস (Yaas Cyclone) কবলিত বিভিন্ন এলাকায়। পর্যাপ্ত খাদ্য-বস্ত্র নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দরবন-সহ বঙ্গোপসাগরের উপকূলে পড়ে থাকছেন। জিজ্ঞেস করলে বলছেন, “সবার মধ্যে বোনকে খুঁজছি। ওকে তো বাঁচাতে পারলাম না। প্রকৃতির অভিশাপে বিপর্যস্ত মানুষের সেবা করলে আমার মৃত বোনের আত্মা শান্তি পাবে।” 

Advertisement

যুবকের নাম ধৃতিমান সেনগুপ্ত। দক্ষিণ কলকাতার এই বাসিন্দা এক বহুজাতিক সংস্থার উঁচু পদে কর্মরত। ভারত-সহ বিশ্বের ৩৯টি দেশজুড়ে কাজ। গত মাসে ধৃতিমানের একমাত্র ছোট বোন করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তারপর জীবন বইতে থাকে অন্য খাতে। ‘কোভিড লোকাল টাস্ক ফোর্স’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp) গ্রুপ তৈরি করেন। সেখানে চিকিৎসক, বিভিন্ন হাসপাতালে কর্তা, শিল্পী, অভিনেতা, কয়েকজন শিল্পপতি ও বিভিন্ন পেশার মানুষ যোগ দেন। কোভিডের বিরুদ্ধে শুরু হয় যুদ্ধ। পালস মাপার অক্সিমিটার, কোভিড আক্রান্তের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া, ভরতি হতে না পারা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, অক্সিজেন সিলিন্ডারের সমস্যা মেটানোর মতো কাজ করতে থাকেন ধৃতিমান ও তাঁর বন্ধুরা। দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) দুস্থদের জন্য শুরু হয় দু’টি কমিউনিটি কিচেন।

[আরও পড়ুন: ভাল কাজের পুরস্কার, তৃণমূলের যুব সভাপতির পদে ‘বাজিগর’ সায়নী ঘোষ]

এসবের মাঝে রাজ্যের উপকূলে হানা দেয় বিধ্বংসী সাইক্লোন যশ বা ইয়াস। লন্ডভন্ড হয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। কারও মাথার ছাদ উড়ে যায়। কোথাও গোটাবাড়ি তলিয়ে যায় জলের নিচে। গৃহহারা, অন্নহীন, বস্ত্রহীন হয়ে পড়েন অগুনতি মানুষ। এবার বিধ্বস্ত এলাকায় যাওয়া শুরু করেন ধৃতিমানরা। 

সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে যান তাঁরা। শাড়ি, গামছা, লুঙ্গি, স্যানিটারি, ন্যাপকিন, ব্লিচিং, জিওলিন, মাস্ক এবং খাদ্য সামগ্রী নৌকায় ভরতি করে তারা হাতে তুলে দিতে শুরু করেন সুন্দরবনের মানুষকে। সুন্দরবনে এই দলটির স্লোগান ‘যশের পরে, মানুষের তরে, সুন্দর মনে সুন্দরবনে।’ রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শত হাত দূরে থাকেন ধৃতিমানের বন্ধুরা শনিবার পাথরপ্রতিমা ব্লকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শেষে এই দলের অন্যতম সদস্য অঙ্কুর দাস বললেন, “আমফানের পর যশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর ম্যানগ্রোভ। আমরা দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পে সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ রোপন কর্মসূচী নেব।” শুধু সুন্দরবন নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের যশ বিধ্বস্ত খেজুরিতে বাস বোঝাই করে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন ধৃতিমানরা। স্থানীয়দের থেকে জেনে নিচ্ছেন কোন গ্রামে কোন জিনিস বেশি করে প্রয়োজন। সেই মত শুকনো খাবার, রান্নার খাদ্য সামগ্রী ও শাড়ি-গামছা-লুঙ্গি বাস বোঝাই করে খেজুরিতে বিলি করছে এই দল।  রবিবার ধৃতিমানরা যাবেন মৌসুনি দ্বীপে। এই যে এত জায়গায় যাচ্ছেন, তাতে কাজের অসুবিধে হচ্ছেনা? প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ কাজের তো ক্ষতি হচ্ছেই। আমি গত একমাস ঠিক মতো অফিসের কাজ করতে পারছি না। তবে আমাদের বহুজাতিক সংস্থা এই বিপন্ন মানুষদের পাশে থাকার কাজে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে।”

[আরও পড়ুন: মাতৃবিয়োগের পর ফোন তৃণমূল নেতৃত্বের, খোঁজ নেয়নি বিজেপি, ‘অভিমানী’ প্রবীর ঘোষাল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার