স্টাফ রিপোর্টার: ৬০ দিনের বদলে এবার মাত্র ১৫ দিনে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেবে রাজ্যের পুরসভাগুলি। বস্তুত এই কারণে পুরসভা পরিচালনায় এক্সিকিউটিভ অফিসারদের ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রশাসনিক সংস্কারও সম্পূর্ণ করল রাজ্য। মঙ্গলবার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত পুর সংশোধনী বিলও পাস হয়ে গেল। আর তারপরেই রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দেন, প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়িয়ে উন্নততর পরিষেবা দেওয়ার জন্যই পুর আইনে এই সংশোধনী আনা হল। পুরসভাগুলিতে আরও গতি আনতে আলাদা ‘মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস ক্যাডার’ তৈরির প্রস্তাব নবান্নকে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ফিরহাদ।
বিলের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন শাসকদলের একাধিক বিধায়ক,অপূর্ব সরকার, ডা. রানা চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বিরোধিতা করেন বিজেপির বিধায়করা। সুমন কাঞ্জিলাল, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা, সুদীপ মুখোপাধ্যায়। তবে মুখে বিরোধিতার কথা বললেও বিজেপির পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এই সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে নেন। স্বভাবতই জবাবি ভাষণে ফিরহাদ হাকিম বিরোধী শিবিরের এই স্ববিরোধিতা নিয়ে কটাক্ষ করেন। বলেন, ‘‘বিরোধীদের মধ্যে বিল নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। স্ববিরোধিতা রয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব ইস্যুতে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী, ভোটার তালিকায় নাম তোলা নিয়ে সর্তক করলেন রাজ্যবাসীকে]
ফিরহাদের বক্তব্য, এখন জনসংখ্যার ৪০% শহরে থাকেন। জনবিন্যাসের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পুরসভাগুলির দক্ষতা বাড়ানো দরকার। তাই এই বিল। বিরোধীরা এই সংশোধনী বিলকে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা খর্বের চেষ্টা বলে দাবি করার চেষ্টা করেন। সেই প্রসঙ্গে ফিরহাদের বক্তব্য, জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা খর্ব করার প্রশ্নই নেই। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে, জনপ্রতিনিধিরা কি ক্লার্ক? লাইসেন্স, ট্যাক্স, বিল্ডিং প্ল্যান -এসব দেখা কী জনপ্রতিনিধিদের কাজ? কাউন্সিলররা নীতি নির্ধারণ করবে।’’
বাংলার পুর পরিষেবা শীর্ষে নিয়ে যেতে গেলে যে প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানো দরকার, সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে পুরমন্ত্রী বলেন, বিল্ডিং প্ল্যান তাড়াতাড়ি অনুমোদন হয়ে গেলে সমস্যা কোথায়? এখন বাড়ির নকশা অনুমোদনে ৬০ দিন সময় লাগে। এবার প্রয়োজনীয় নথি ঠিক থাকলে পনেরো দিনেই কাজ হয়ে যাবে। নকশা অনুমোদন নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কোনও বক্তব্য থাকলে তা বোর্ড অফ কাউন্সিলরস বা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলের বৈঠকে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে জনপ্রতিনিধিরা প্রস্তাবিত বাড়ির-জমির পরিদর্শন করবেন। ফিরহাদের সাফ বক্তব্য, বোর্ড অফ কাউন্সিলরস বা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলের বৈঠকের জন্য যাতে পরিষেবা আটকে না থাকে তার জন্যই এই সংশোধনী। এতে প্রশাসন চালাতে সুবিধা হবে। স্বচ্ছতা বাড়বে।