ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দীপাবলির (Diwali) আলোকোৎসবে গোটা দেশ যখন মাতোয়ারা, সকলের অলক্ষে আঁধার জীবনে আলোর ঠিকানা পেলেন ২২ জন। এঁদের মধ্যে তিনটি দু’বছরের শিশুও রয়েছে। ছুটির দিনে চোখে সফল অস্ত্রোপচার এদের প্রকৃতই দীপাবলির রোশনাই দেখাল। একই দিনে এতজনের চোখের অস্ত্রোপচার এর আগে ঠিক কবে হয়েছে তা মনে করতে পারছেন না সংস্থার আধিকারিকরা। এমন অসম্ভব সম্ভব হল কী করে?
পুজোর সময় সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার সময়ই প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি (আরআইও)-র অধিকর্তা অধ্যাপক ডা. অসীমকুমার ঘোষ। দীপাবলির উৎসবের দিন অন্তত কুড়ি জনের চোখে অস্ত্রোপচার হোক। আলোর উৎসবকে এমনভাবে স্মরণীয় করে রাখার সুযোগ লুফে নেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
[আরও পড়ুন: রাজীবের দলবদলে শিক্ষা! দল ছাড়ার প্রবণতা রয়েছে এমন কাউকে বড় পদ দেবে না বিজেপি]
সেইমতো বুধবার, দীপাবলির আগের দিন আরআইও-তে ভরতি থাকা ২২ জন রোগীকে বেছে নেওয়া হয়। এঁদের মধ্যে দু’টি শিশু, যাদের কিনা জন্ম থেকে ছানির সমস্যা। এ ছাড়া কয়েকজনের ডায়াবেটিস থেকে অন্ধত্ব কিংবা ধাক্কা লেগে রেটিনার ক্ষতির মতো সমস্যা ছিল। বৃহস্পতিবার প্রায় সব হাসপাতালে যখন ছুটির মেজাজ, আরআইও-য় তুমুল কর্মব্যস্ততা। ঘড়ির কাঁটা সকাল ন’টা ছুঁতেই অপারেশন থিয়েটারের বাইরে লাল আলো জ্বলে উঠল।
ডা. শ্যামাপদ বিশ্বাস, ডা. সৌম্যদীপ মজুমদার এবং ডা. সৌমেন গড়া অপারেশন শুরু করেন, সঙ্গে ডা. অসীমকুমার ঘোষ। সন্ধে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পরের পর অস্ত্রোপচার। ডা. ঘোষের কথায়, “সব অপারেশন সফল। দশ জন পুরুষের মধ্যে কয়েক জনের ছানি অপারেশন হয়েছে। মহিলাদের মধ্যে রেটিনার সমস্যা-সহ চোখের অন্যান্য গোলযোগ ছিল।”
[আরও পড়ুন: বঙ্গ রাজনীতির অপূরণীয় ক্ষতি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিকমহল]
সর্বব্যাপী দীপাবলি সমারোহের মাঝে আলোর উৎসবকে স্মরণীয় করতে রোগীদের চোখের আলো ফিরিয়ে দেওয়ার খবর বিকেলেই পৌঁছে গিয়েছে স্বাস্থ্যভবনে। চিকিৎসকদের কুর্নিশ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এদিন অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের মতো আরআইও-র আউটডোর খোলা থাকলেও রোগীর সংখ্যা অনেক কম। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আরও ১৪ জনের চোখের অস্ত্রোপচার হবে আগামী সোমবার।