সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুদিন আগে আমফান বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার এনায়েতপুরে শোলার শিল্পীদের পরিবারকে সাহায্য করেছিলেন। এবার ত্রাণসামগ্রীর গাড়ি নিয়ে রাজ্যের দক্ষিণতম অঞ্চল গঙ্গাসাগরে পৌঁছে গেলেন কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা। পুজো উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর ছাতার তলায় উদ্যোক্তারা ত্রাণসামগ্রী বিলি করলেন আমফান বিধ্বস্ত গঙ্গাসাগরের দুস্থ মানুষদের মধ্যে। গতকাল, সোমবার ভোরে চাল, ডাল, চিনি, তেল, চিরে, বিস্কুট, সাবান, গুঁড়োসাবান, নুন, মোমবাতি, দেশলাই, মাস্ক, মাজা, জল, শাড়ি এবং ত্রিপল নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন পুজোওয়ালারা।
কলকাতা থেকে সড়কপথে তাঁরা পৌঁছে যান প্রায় ১০০ কিমি দূরে নামখানা লট-৮ এর এক নম্বর জেটিতে। মাথার উপর তখন প্রথর রোদ। সেসব উপেক্ষা করে পুজো উদ্যোক্তারা সমস্ত ত্রাণসামগ্রী ভটভটিতে তুলে মুড়িগঙ্গা পেরিয়ে আধঘণ্টায় পৌঁছন কচুবেড়িয়া। তারপর সেখান থেকে গাড়িতে ত্রাণসামগ্রী বোঝাই করে ৩০ কিমি দূরে ধবলাহাট গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। ধবলাহাটের ৭ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে তাঁরা দেখেন, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে নারী-পুরুষ-শিশু চোখে একরাশ আকুতি আর আশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন একটু ত্রাণের জন্যে। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৪টি পরিবারের হাতে ত্রাণসামগ্রী দেন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সদস্যরা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও হাতিবাগান সর্বজনীন পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা শাশ্বত বসু জানিয়েছেন, ‘পাশের গ্রাম ধবলাহাট ৫ নম্বর পঞ্চায়েতের কালীবাজারে গিয়ে আশ্চর্য হওয়ার বাকি ছিল আমাদের। যেখান থেকে আমাদের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে বলা হল সেটা ছিল শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গা দেবীর মন্দির। আগে থেকেই নারী পুরুষ শিশুরা লাইন দিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিলেন। এখানে প্রায় ১১৬টি পরিবারের হাতে আমরা ত্রাণসামগ্রী তুলে দিই। যখন এক একটি শাড়ি মায়েদের হাতে তুলে দিচ্ছিলাম আমরা, তাদের হাসি মুখগুলি দেখে সারাদিনের তীব্র দাবদাহে আমাদের ক্লান্ত শরীরগুলো যেন নতুন করে আবার শক্তি ফিরে পেল।’
[আরও পড়ুন: আমফান বিধ্বস্ত শোলার শিল্পীদের পাশে কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা, হাতে তুলে দিলেন খাদ্যসামগ্রী]
প্রসঙ্গত, এই দুই গ্রামের এমন কোনও বাড়ি নেই যার টিনের চাল উড়ে যায়নি। তবে প্রশাসনের সহায়তায় ধীরে ধীরে মাথার উপর ছাদ ফিরে পাচ্ছেন ধবলাহাটের মানুষজন। শাশ্বতবাবু জানিয়েছেন, ২০০ পরিবারকে অন্তত ৭ দিনের নিশ্চয়তা পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের ছাতার তলায় একেকটা পুজো কমিটি আজ যেভাবে ঐ প্রান্তিক মানুষগুলোর মহাসংকটে তাঁদের পাশে কিছুটা হলেও দাঁড়াতে পারল তাদের মুখে এক মুহূর্তের জন্যেও হাসি ফোটাতে পারল, এই পরম প্রাপ্তি কোনও অর্থের বিনিময়ে পাওয়া যায় না।’
[আরও পড়ুন: সুদূর বস্টন থেকে সুন্দরবন, বাংলার টানেই আমফান বিধ্বস্তদের জন্য ত্রাণ পাঠালেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ]
The post আমফান বিধ্বস্ত সাগরদ্বীপের পাশে কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা, ২০০ পরিবারকে ত্রাণ বিলি appeared first on Sangbad Pratidin.