স্টাফ রিপোর্টার: আর্থিক সংকটের জেরে পাঁচ মাস আগে অবসর নেওয়া কর্মীদের পেনশন বন্ধের নোটিস পুরসভার কমিশনার দেননি। জানতেন না তিনিও, শুক্রবার দাবি করলেন স্বয়ং মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। পেনশন বন্ধের খবরে পুরসভার অবসর নেওয়া কর্মীদের মধ্যে যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে তা স্বীকার করে নিয়ে মেয়র জানান, “সকলকে আশ্বস্ত করে বলছি, পুরসভায় প্রবল আর্থিক সংকট আছে একথা ঠিক, কিন্তু সময়েই পুরকর্মীদের বেতন ও পেনশন হবে।”
পুরসভার অধিবেশনে কংগ্রেস (Congress) কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের কাউন্সিলরদের সাম্মানিক বৃদ্ধির প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে এদিন মেয়র জানিয়েছেন, ঠিকাদারদের বিলের পাওনা ও পে-কমিশনের জেরে কর্মীদের বর্ধিত বেতনের অংশ মিলিয়ে পুরসভাকে মেটাতে হবে হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও করোনা সামাল দিয়ে শহরের দৈনন্দিন পুরপরিষেবা চালাতে গিয়েও প্রতি মাসে বিপুল টাকা খরচ হচ্ছে। পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) আর্থিক সংকট সামাল দিতে গাড়ির তেলের খরচ কমানো হচ্ছে, বিজ্ঞাপন ও নানা অনুষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মেয়র জানান।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের ৪ পুরনিগমের ভোটের ফলপ্রকাশ কবে? বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিনক্ষণ ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের]
পাঁচ মাস আগে অবসর নেওয়া কর্মীদের পেনশন বন্ধের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভায় একটি নোটিশ পড়ে। লেখা ছিল, আর্থিক সঙ্কটের জেরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর যাঁরা অবসর নিয়েছেন তাঁদের পেনশন আপাতত দেওয়া হবে না। ঘটনার জেরে রাতেই আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করেও মেয়র জানান, “পুরসভার তরফে সরকারিভাবে এমন কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি, পুরোপুরি ভুয়ো। কে বা কারা লাগিয়েছে তা জানতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।” স্বয়ং পুরকমিশনার বিনোদ কুমার এই তদন্তের দায়িত্বে।
[আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভার শ্রদ্ধার্ঘ্য, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নামে রাস্তার নামকরণের ঘোষণা ফিরহাদের]
এদিন টাউন হলে মাসিক অধিবেশন শেষে ফের মেয়র দাবি করেন, “পেনশন নিয়ে পুরোপুরি ‘ফেক নোটিস’ দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র খবর করিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে যে লাগিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে পুরসভা বিভাগীয় কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।” এদিন টাউন হলের বাইরে অধিবেশনে ঢোকার আগে ‘নো পেনশন, নো কেএমসি’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ (Sajal Ghosh)। বিক্ষোভকে রাজনীতির জন্য লোকদেখানো বলে মন্তব্য করেন মেয়র। রাজ্যের প্রাক্তন বিধায়কদের মতো পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলরদেরও পেনশন চালুর প্রস্তাব দেন কংগ্রেসের সন্তোষ পাঠক। জবাব দিতে উঠে ফিরহাদ বলেন,“রাজ্যের পুর আইনে এমন কোনও ব্যবস্থা চালু করার সুযোগ নেই। তবু প্রস্তাবটি পুর দপ্তরে পাঠিয়ে দেব।”