অর্ণব আইচ: গঙ্গার ধারে বিভিন্ন জেটিই তাদের মূল ‘টার্গেট’। এ ছাড়াও গঙ্গায় নোঙর করা জলযানও থাকে তাঁদের নজরে। জলদস্যুদের আদলেই কলকাতায় (Kolkata) রীতিমতো নৌকো নিয়ে গ্যাং তৈরি করেছে গঙ্গার ‘জল-লুটেরা’রা। এই গ্যাংয়ের মাথাই ধরা পড়েছে কলকাতা পুলিশের হাতে। মহম্মদ জাকির নামে ওই ‘জল-লুটেরা’কে জেরার সূত্র ধরেই এই গ্যাংটির উপর কড়া নজর রাখছে পুলিশ।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, রাতের অন্ধকারে উত্তর কলকাতার কাশীপুর এলাকার জ্যোতিনগর কলোনি থেকে নৌকো নিয়ে বেরিয়ে পড়ে এই গ্যাং। রাতে যাতে গঙ্গায় ভুটভুটির শব্দ না হয়, তাই দাঁড় টানা নৌকোই ব্যবহার করে তাঁরা। মেটিয়াবুরুজ থেকে উত্তরপাড়া, বা আরও দূরে গঙ্গায় ঘুরে বেরিয়ে রেইকি করে তারা। তাঁদের নজর থাকে জেটিগুলোর দিকে। আবার কখনও কোনও জাহাজ গঙ্গার বুকে নোঙর করলেও সেখান থেকে কিছু হাতানো যায় কি না, সেদিকেও নজর থাকে তাদের। যদিও কিছুদিন আগেই রাতে নৌকো নিয়ে বেরিয়ে ‘জল-লুটেরা’দের নজর পড়েছিল উত্তর কলকাতার আহিরিটোলা জেটির উপর। এই জেটি কয়েকটি লোহার চেনের সাহায্যে বাঁধা ছিল। নৌকো নিয়ে গঙ্গার ‘জল-লুঠেরা’ গ্যাং আসে ওই জেটির কাছে। তাদের কাছে ছিল গ্যাস কাটার। সেই যন্ত্র দিয়েই তারা লোহার মোটা চেন গলিয়ে কেটে ফেলে। একটি চেনের অংশ তারা নৌকোয় উঠিয়ে পালিয়ে যায়। অত্যন্ত ভারী ওই চেনের অংশ নৌকায় বয়ে এনে পৌঁছয় জ্যোতিনগর কলোনিতে। সেখান থেকে সেই চেন লোহার কারবারীদের কাছে বিক্রি করে দেয় ‘জল লুঠেরা’দের গ্যাং।
[আরও পড়ুন: ‘বেশি প্রভুভক্তি দেখালে থানা জ্যাম করে দেব’, ফের দিলীপের নিশানায় পুলিশ]
জলপুলিশের নজরে পড়ে এই লুটের ঘটনাটি। এই ব্যাপারে উত্তর বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ বিভিন্ন সূত্র মারফৎ ‘জল লুটেরা’ গ্যাংয়ের সম্পর্কে কিছু তথ্য পায়। তাদের সন্ধানে জ্যোতিনগর কলোনিতে হানা দিয়ে পুলিশ এই গ্যাংয়ের মাথা মহম্মদ জাকিরকে গ্রেপ্তার করে। এবার এই ‘জল লুটেরা’ গ্যাংয়ের বাকি সদস্যদের সন্ধান চলছে। তারা যাতে মাথা চাড়া না দিতে পারে, তার জন্য গঙ্গায় জোরদার টহল দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।