গৌতম ব্রহ্ম: ফের অঙ্গদানের নজির শহরে। এক গৃহবধূর মরণোত্তর লিভার বাঁচিয়ে দিল এক স্কুল শিক্ষককে। দাতার নাম চম্পা নস্কর(৪৭)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাড়িতে পড়ে গিয়ে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয় তাঁর। সংকটজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে মুকুন্দপুরের মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শনিবার রাতে সেখানেই তাঁর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয়। তারপরই পরিবারকে অঙ্গদানের ব্যাপারে রাজি করানো প্রক্রিয়া চলে চিকিৎসকদের তরফে। আগে থেকেই কিডনিতে সমস্যায় ভুগছিলেন ওই গৃহবধূ। তাই ঠিক হয়, চম্পাদেবীর হার্ট ও লিভার অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপিত হবে। অ্যাপোলো হাসপাতালে দুই গ্রহীতার সন্ধানও মেলে।
এদিকে রবিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রথমে হৃদযন্ত্র সংগ্রহ করতে অ্যাপোলোর দল মেডিকাতে পৌঁছায়। প্রস্তুত রাখা হয় অনিতা নস্কর নামে বছর পঁয়তাল্লিশের এক মহিলাকে। কিন্তু সংগ্রহের করার পর দেখা যায়, চম্পাদেবীর হৃদযন্ত্রে দু’টো ব্লক রয়েছে। ফলে, প্রতিস্থাপন করা যায়নি। দুপুরে চম্পাদেবীর লিভার সংগ্রহ করা হয়। ১২.৫২ মিনিটে গ্রিন করিডর গড়ে লিভার অ্যাপোলোতে পৌঁছায় ১টা ৩ মিনিটে। চম্পাদেবীর লিভার প্রতিস্থাপিত হয় বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় নামের নদিয়ার কল্যাণীর এক অঙ্কের শিক্ষকের শরীরে। চিকিৎসকরা তাঁকে তত্ত্ববধানে রেখেছেন ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা সম্ভব নয়।
[‘এক কোটি বাংলাদেশিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিচ্ছে মমতার সরকার’]
চম্পাদেবীর স্বামী স্বপন নস্কর রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণ বিভাগের কর্মী। বললেন, ‘কিছুদিন আগেই মাকে হারিয়েছি। এবার স্ত্রীকে হারালাম। এই শোকের মধ্যেও এটা ভেবে ভাল লাগছে, স্ত্রীর অঙ্গ নিয়ে একজন মুমূর্ষু মানুষ নতুন করে বাঁচবেন।’ অঙ্গদানের শরিক হতে পেরে খুশি মেডিকা কর্তৃপক্ষ। খুশি অ্যাপোলোও। যদিও হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন বাতিল হওয়ায় কিছুটা হতাশা কাজ করেছে অনিতাদেবীর পরিবারের মধ্যে। চিকিৎসকরা অবশ্য জানিয়েছেন, এমন তো হতেই পারে। তবে শহরে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সংস্কৃতি চালু হওয়ার বিষয়টি সত্যিই আশাব্যাঞ্জক।
[চলন্ত ট্রেনের গেটে দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা, আচমকা পড়ে মৃত্যু যুবকের]
The post শহরে ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপন, গৃহবধূর লিভার বসল শিক্ষকের শরীরে appeared first on Sangbad Pratidin.