ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্ট বাচ্চাদের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্যভবনের সতর্কবার্তা- দু’বছরের কম বয়স জ্বর-সর্দি হলেই সর্তক হন। আর সেই বাচ্চার ফুসফুসে যদি কোনও ত্রুটি থাকে তবে চূড়ান্ত সর্তকতা নিতে হবে। শুধু অভিভাবক নয়, চিকিৎসকদেরও সতর্ক করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। কারণ, গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যে যতগুলো একরত্তি জ্বর-সর্দি,কাশিতে অকালে মারা গিয়েছে তাদের নেপথ্যে রয়েছে ফুসফুসে জন্মগত ত্রুটি।
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে ৮টি শিশু মারা গিয়েছিল। আর বুধবার বিকেল পর্যন্ত সংখ্যাটা পাঁচের কোটায় ঠেকেছে। সব মিলিয়ে বুধবার পর্যন্ত রাজ্যে জ্বর শ্বাসকষ্টে ৪৬টি বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: অ্যাডিনোর জেরে স্থায়ী ক্ষতি একরত্তির ফুসফুসেও, কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা?]
দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও সংক্রমণে ভাঁটা পড়েনি। মঙ্গলবারের পর বুধবারেও ৮৫টি বাচ্চা বিসি রায় শিশু হাসপাতালে ভরতি হয়েছে। মেডিক্যালে ভরতি হয়েছে ১৮টি শিশু। দু’টি হাসপাতালেই বাচ্চাদের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। দু’টি হাসপাতালেই পরির্দশন করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম-সহ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। পরে স্বাস্থ্য সচিব জানান, বিসি রায় হাসপাতালে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে আরও ৭২টি শয্যা বাড়ানো হল। মেডিক্যালে আরও ৫০টি শয্যা বাড়ানো হয়েছে। একধাপ এগিয়ে স্বাস্থ্যসচিবের আশঙ্কা, যতগুলো বাচ্চা এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছে তাদের ফুসফুসে স্থায়ী সমস্যা বা কনজিনেন্টাল হার্ট ডিজিজ ছিল। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, বিসি রায় ও মেডিক্যালে যে ছ’টি শিশু মারা গিয়েছে তাদের মধ্যে তিনটি’র ফুসফুসে সমস্যা ছিল সঙ্গে অ্যাডিনোর সংক্রমণ। তাই দু’বছরের কম বয়সী ও ফুসফুসে সমস্যা থাকলে অভিভাবক তো বটেই চিকিৎসকদেরও আরও সর্তক থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য সচিব যখন কলকাতার হাসপাতালে শয্যা বাড়িয়ে রোগী ভরতির ব্যবস্থা করছেন ঠিক সেই সময় জেলা হাসপাতালগুলির সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করছে স্বাস্থ্যর্কতারা। স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তার বক্তব্য, রাতারাতি বাচ্চাদের জন্য পিকু(পেডিয়াট্রিক কেয়ার ইউনিট), নিকু( নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট) করা সম্ভব নয়। তাই করোনার সময় বড়দের জন্য কেনা আইসিইউ পরিকাঠামো ব্যবহার করতে হবে। সি-প্যাপ, বাইপ্যাপের মতো নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন, মাস্ক, ক্যানুলার মতো যন্ত্রের সার্কিট ও অক্সিজেনের মুখ বদলে ছোটদের জন্য ব্যবহার করা যেতেই পারে। এই কাজের জন্য সব হাসপাতালে টেকনিশিয়ান রয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাচ্চার সর্দি-কাশি-জ্বর, কখন নিয়ে যাবেন হাসপাতালে? ‘3F’ ফমুর্লা দিলেন ডা. অপূর্ব ঘোষ]
বাচ্চাদের সংক্রমন আটকাতে রাজ্য প্রশাসন কোমরবেঁধে নামলেও ট্রপিক্যালে কোনও টেস্ট কিট নেই। এখন পরীক্ষার জন্য ভরসা নাইসেড। ওই সংস্থার ক্ষমতা সীমিত. তবে ট্রপিক্যালে কিট কবে আসবে? তা সঠিক বলতে পারেননি স্বাস্থ্যকর্তারা। ঘটনা হল টেস্ট কিট প্যানেল থে্কে একসঙ্গে অন্তত পাঁচটি ভাইরাস সংক্রমণ বোঝা য়ায়। তবে এর খুব একটা প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেননা বিশেষজ্ঞরা। কারন খুব কম সংখ্যক রোগীকেই টেস্ট কিট প্যানেলে আনতে হয়।