গোবিন্দ রায়: এ যেন রক্ষকই ভক্ষক! বছর কুড়ির ছোট বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল বড় দাদার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে পিতৃহারা ছোট বোনের উপর নানারকম শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক হেনস্তা চলছিল বলে অভিযোগ। ঘটনায় বিস্মিত কলকাতা হাই কোর্ট। 'শিউরে ওঠার মতো' বলে মত আদালতের। অবিলম্বে ওই নির্যাতিতাকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সুন্দরবনের পুলিশ সুপারকে (Police Super) নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের গ্রীষ্মের অবকাশকালীন বেঞ্চ। একইসঙ্গে ৩০ জুনের মধ্যে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করতে হবে বলেও নির্দেশ উচ্চ আদালতের।
বাড়িতে বড় দাদা থাকলে বাবার অবর্তমানে তিনিই বাবার ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল। সেই রক্ষক দাদাই যে কোনও সময় 'ভক্ষকে' পরিণত হবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি সুন্দরবনের (Sunderbans) বাসিন্দা বছর কুড়ির ফারজিনা (নাম পরিবর্তিত)। অভিযোগ, দাদাই বার বার বোনের উপর শারীরিক, মানসিক নির্যাতন চালিয়ে গিয়েছে। তা নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন তরুণী। মামলাকারীর আইনজীবী তন্ময় বসু জানান, "কয়েক বছর আগে তাঁর বাবা মারা গিয়েছে। তার পর থেকে সংসারের ভার দাদার উপর। এছাড়াও বাবার রেখে যাওয়া কিছু সম্পত্তি ছিল। এসবের মধ্যেই হঠাৎ শারীরিক নির্যাতন শুরু হয় ফারজিনার উপর।"
[আরও পড়ুন: মাঝ আকাশেই বোমাতঙ্ক! শ্রীনগরে অবতরণের পর দ্রুত খালি করা হল বিমান]
আইনজীবী আরও জানান, "বাবার রেখে যাওয়া কিছু সম্পত্তি ছিল তাঁর নামে। উদ্দেশ্য ছিল বোনের নামে সেসব সম্পত্তি আত্মসাতের। অভিযোগ, এই কাজে নির্যাতিতার মায়েরও ইন্ধন ছিল।" শুধু সম্পত্তি হাতানোই নয়, এর পর শুরু হয় যৌন নির্যাতন (Physical Assault)। দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে শেকলে বেঁধে ধর্ষণ করা হতো বলে অভিযোগ। গত ১৬ মার্চ একসময় নির্যাতিতার চিৎকারে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ করা হয় থানায়। কিন্তু তাতেও বিপত্তি।
[আরও পড়ুন: তেরঙ্গা হাতে নাচতে নাচতেই মৃত্যু প্রাক্তন সেনাকর্মীর! তখনও চলল হাততালি]
পুলিশি তদন্তে প্রশ্ন তুলে ফের কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হতে হয় নির্যাতিতাকে। আদালতে তাঁর আইনজীবী তন্ময় বসুর অভিযোগ, যেখানে ধর্ষণের মতো ঘটনার অভিযোগ সেখানে পুলিশ নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি না নিয়ে অভিযুক্তের জবানবন্দি নিয়েছে। একইসঙ্গে ফারজিনার নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে মামলায়। আদালতে আইনজীবীর দাবি, নির্যাতিতা ডিএলএড পড়ুয়া। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি এক গোপন আস্তানায় আছেন। এসবের মধ্যে পড়াশোনা বন্ধ। তার প্রেক্ষিতে তিনি যাতে পড়াশোনা করতে পারে, সেই ব্যবস্থারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।